অযোধ্যা মামলার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে নতুন বেঞ্চ গঠন হবে।—ছবি পিটিআই।
রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি কবে থেকে শুরু হবে, তা ১০ জানুয়ারি ঠিক হবে। তার আগেই এই মামলা শোনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে নতুন বেঞ্চ গঠন হবে।
১০ জানুয়ারির পরে শুনানি শুরু হলেও লোকসভা ভোটের আগে অযোধ্যার বিতর্কিত জমি বিবাদের মামলার নিষ্পত্তির আশা কম। সঙ্ঘ পরিবার দাবি তুলেছে, রোজ মামলার শুনানির ব্যবস্থা করে সুপ্রিম কোর্ট দ্রুত এ বিষয়ে ফয়সালা নিক। কিন্তু আজই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন।
আইনজীবী হরিনাথ রাম জনস্বার্থ মামলা করে দাবি করেছিলেন, রামমন্দির ঘিরে আবেগের প্রেক্ষিতে অযোধ্যার মামলাটি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শুনানি হোক। কিন্তু আজ প্রধান বিচারপতি তা খারিজ করে দেন। এর আগে মামলার অন্যতম শরিক অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভাও শুনানির তারিখ এগিয়ে আনার আর্জি জানিয়েছিল। গত ২৯ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট সেই আর্জিও খারিজ করে জানায়, জানুয়ারিতে নতুন বেঞ্চ গঠন হবে। সেই বেঞ্চই ঠিক করবে, কবে শুনানি হবে।
এ বার মামলা আরও এক সপ্তাহ পিছিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ জানাল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। পরিষদের কার্যকরী সভাপতি অলোক কুমার বলেন, ‘‘২৯ অক্টোবরই উপযুক্ত বেঞ্চ গঠন হলে ভাল হত। এ বার দেখতে হবে, সুপ্রিম কোর্টের নতুন বেঞ্চ রোজ শুনানি করে দ্রুত নিষ্পত্তির পথে হাঁটে কি না।’’
আইনজীবীদের মতে, ১০ জানুয়ারির আগেই তিন বিচারপতির বেঞ্চ গঠন হবে। যেখানে প্রধান বিচারপতি নিজে থাকবেন। আজই কোন বেঞ্চে শুনানি হবে, তা জানা যাবে ভেবে প্রধান বিচারপতির এজলাসে ভিড় জমেছিল। কিন্তু মামলা আসতেই প্রধান বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘‘এটা কি রাম জন্মভূমি মামলা? হ্যাঁ? আচ্ছা। তা হলে নির্দেশ শুনে নিন। ১০ জানুয়ারি উপযুক্ত বেঞ্চ এই মামলার পরবর্তী নির্দেশ দেবে। আপনারা ১০ জানুয়ারিই আসবেন।’’ এক মিনিটের মধ্যেই পুরো বিষয়টা মিটে যাওয়ায় রাজীব ধবন, হরিশ সালভে-সহ দু’পক্ষের আইনজীবীরা কিছু বলারই সুযোগ পাননি।
লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার নতুন করে রামমন্দির ভাবাবেগ খুঁচিয়ে তুলতে চাইলেও কংগ্রেস চাইছে, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে চাষিদের ক্ষোভ, রাফাল দুর্নীতি, চাকরির অভাবকে হাতিয়ার করতে। রাহুল গাঁধীও তা স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিষয় খুব স্পষ্ট। তরুণদের জন্য চাকরি, চাষিদের সমস্যা, অর্থনীতিতে ধাক্কা, প্রধানমন্ত্রীর রাফাল দুর্নীতি।’’ রামমন্দির নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে তাঁর জবাব, ‘‘আদালতের বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।’’
ভিএইচপি আজ ফের দাবি তুলেছে, সরকার সংসদে আইন করে রামমন্দির তৈরির পথ তৈরি করুক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেও বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট ফয়সালা নেওয়ার পরেই সরকারি স্তরে কী করা হবে, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা হতে পারে।