বেহাল রেলেই কাজ শুরু হল বুলেট ট্রেনের

বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন যদিও মোদী প্রথম দেখাননি। মনমোহন সিংহের স্বপ্নই আজ মোদীর হাত ধরে এক ধাপ এগিয়ে গেল। সবরমতী স্টেডিয়াম থেকে মুম্বই-অমদাবাদের মধ্যে দেশের প্রথম বুলেট ট্রেনের কাজ সুইচ টিপে শুরু করলেন মোদী।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

অমদাবাদ শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:২০
Share:

ফাইল ছবি।

একের পর এক দুর্ঘটনা। ইস্তফা দিতে হয়েছে রেলমন্ত্রী, রেলবোর্ডের চেয়ারম্যানকে। শুধু পরিচালনাই নয়, নড়বড়ে আর্থিক হাল পাল্টে রেল কবে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে, তা-ও জানে না কেউ। এরই মধ্যে নতুন ভারতের স্বপ্ন দেখিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-কে পাশে নিয়ে আজ বুলেট ট্রেনের কাজ শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী। আর ঘটনাচক্রে আজই নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে বেলাইন হয়ে গেল জম্মু-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস।

Advertisement

বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন যদিও মোদী প্রথম দেখাননি। মনমোহন সিংহের স্বপ্নই আজ মোদীর হাত ধরে এক ধাপ এগিয়ে গেল। সবরমতী স্টেডিয়াম থেকে মুম্বই-অমদাবাদের মধ্যে দেশের প্রথম বুলেট ট্রেনের কাজ সুইচ টিপে শুরু করলেন মোদী। তখন তাঁর পাশে প্রকল্পের অন্যতম ঋণদাতা দেশ, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। প্রথমে ৬৫ হাজার কোটি টাকা বাজেট থাকলে‌ও, এখন গোটা প্রকল্পটির জন্য খরচ হবে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ৮৮ হাজার কোটি খুব অল্প সুদে ঋণ দিতে রাজি হয়েছে জাপান। মোদীর কথায়, ‘‘এমন বন্ধু কে রয়েছে যে ৫০ বছরের জন্য ০.১ শতাংশ হারে ঋণ দেয়!’’ প্রাথমিক ভাবে প্রকল্প শেষ করতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময় লাগলেও, মোদী আজ জানিয়ে দেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছরে অর্থাৎ ২০২২ সালের মধ্যে বুলেট ট্রেন চালু করতে হবে। ঘণ্টায় প্রায় ৩২০-৩৫০ কিলোমিটার গতিতে ছোটা ট্রেনে মুম্বই থেকে অমদাবাদ— ৫০৮ কিলোমিটার পথ পেরোতে সময় নেবে মাত্র দু’ঘন্টা। যাত্রাপথে থাকবে ১২টি স্টেশন। আরব সাগরের নীচে ৭ কিলোমিটার টানেল পেরিয়ে বুলেট ট্রেন পৌঁছবে মুম্বইয়ের থানেতে।

আরও পড়ুন: ৩৩ ঘণ্টার ‘দুঃস্বপ্ন’ কাটিয়ে গন্তব্যে বৃদ্ধ

Advertisement

ভারতীয় রেলের স্বপ্নের এই প্রকল্পের কাজ শুরুর দিনে বিভিন্ন প্রশ্ন ও বিতর্ক যেমন উঠেছে, তেমনি জমি অধিগ্রহণের আশঙ্কায় বিরোধিতাও এসেছে চাষিদের থেকে। এ দিন মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার কৃষকরা জমি হারানোর ভয়ে বুলেট ট্রেন প্রকল্পের বিরোধিতায় পথে নামেন। কৃষিজমি হাতছাড়া হলে তাঁদের জীবনে সঙ্কট নেমে আসবে— এই যুক্তি দেখিয়ে বইসর রেল স্টেশনের বাইরে স্লোগান আর কালো পতাকা দেখিয়ে বিক্ষোভ দেখান তারা।

তবে এত সব প্রশ্নের মধ্যেও বুলেট গতির স্বপ্নকে সফল করতে যুক্তি দিয়ে চলেছে রেল। মন্ত্রকের কর্তাদের মতে, রেলের নড়বড়ে আর্থিক অবস্থার সঙ্গে এই প্রকল্পের কোনও সংঘাত নেই। কারণ, এর জন্য রেলকে এক পয়সাও দিতে হবে না। জাপান ও কেন্দ্র সরকারের অর্থে প্রকল্প এগোবে। নিরাপত্তার প্রশ্নে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের যুক্তি, ‘‘বুলেট ট্রেনের জন্য ‘ডেডিকেটেড’ লাইন বানানো হবে। জাপানের শিনকেনশেন প্রযুক্তির বুলেট ট্রেনে এখনও দুর্ঘটনা ঘটেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন