USA-China

ট্রাম্পের নীতিতে দাপট বেজিংয়েরই

কোভিড শুরু হওয়ার সময় থেকে বছর চারেক অভ্যন্তরীণ এবং কূটনৈতিক যে সঙ্কটে ভুগেছে শি জিনপিংয়ের চিন, তা ক্রমশ লঘু হচ্ছে। কোয়াড শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের (চলতি বছরে) আয়োজক দেশ হিসেবে ভারতের কাছে যা চ্যালেঞ্জের।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫ ০৮:২২
Share:

(বাঁ দিকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প। শি জিনপিং (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।

সদ্যসমাপ্ত কোয়াড-এর বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরে এই প্রথম স্পষ্টভাষায় চিনের একাধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কৌশলপত্র প্রকাশ করা হল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। কোয়াডের এই প্রয়াসকে মাথায় রেখে এ-ও বলা হচ্ছে, সার্বিক ভূরাজনীতিতে চিনের প্রত্যাবর্তন ঘটছে নিশ্চিত ভাবেই। কোভিড শুরু হওয়ার সময় থেকে বছর চারেক অভ্যন্তরীণ এবং কূটনৈতিক যে সঙ্কটে ভুগেছে শি জিনপিংয়ের চিন, তা ক্রমশ লঘু হচ্ছে। কোয়াড শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকের (চলতি বছরে) আয়োজক দেশ হিসেবে ভারতের কাছে যা চ্যালেঞ্জের।

করোনা সংক্রমণ ঘিরে গোটা অঞ্চলের সন্দেহের পাত্র হওয়া, ভৌগোলিক সম্প্রসারণবাদের অভিযোগ, দেশের ভিতর চাহিদার নিম্নগতি অথচ অতিরিক্ত উৎপাদন, আমেরিকার রফতানি নিয়ন্ত্রণের নীতিতে বৃদ্ধি হওয়ার মতো সমস্যা গত চার বছরে ঘিরে ছিল বেজিংকে। এই সময়েই জো বাইডেন প্রশাসন ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে শক্তিশালী অক্ষ তৈরি করে চিনকে চাপে রেখেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই চাপ থেকে যে বেরিয়ে আসছে বেজিং, তার জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন জমানা অনেকাংশেই দায়ী। এক দিকে, আমেরিকার বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো গত কালের কোয়াড বৈঠকে চিনের আর্থিক আধিপত্যবাদ, আন্তর্জাতিক বণ্টনব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে নিজেদের পণ্য অন্য রাষ্ট্রের বাজারজাত করা, দুর্লভ খনিজ উৎপাদন বাড়াতে আন্তর্জাতিক বাজারের নীতি-নিয়মকে অগ্রাহ্য করার মতো চিনা নীতির নিন্দা করেছেন। অন্য দিকে, আমেরিকা নিজেই চিনের সঙ্গে চুক্তির বার্তা দিচ্ছে। সূত্রের খবর, ট্রাম্প নিজে একটি শীর্ষ পর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল নিয়ে চিন সফরের তোড়জোড় করছেন।

আবার রাশিয়া যখন চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মাত্রা বাড়াচ্ছে, তখন ট্রাম্প জমানার আমেরিকার প্রতি ইউরোপের শীতলতা প্রকাশ্যে আসছে। কোয়াডভুক্ত দুই রাষ্ট্র— জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়া নেটোর থেকে দূরত্ব তৈরি করেছে। খামখেয়ালি ট্রাম্পের পরিবর্তে চিনের সঙ্গে চুক্তি করতে উদ্যোগী ইউরোপের অনেক দেশ। পরিস্থিতি এমনই যে অপারেশন সিঁদুর পরবর্তী সংঘাতে চিনের পাকিস্তানকে সব রকম সামরিক সহায়তার প্রসঙ্গ গিলে ফেলে বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক শোধরানোর বার্তা দিতে হচ্ছে ভারতকে। এটা স্বাভাবিক যে ট্রাম্পের মধ্যস্থতার ধারাবাহিক দাবিতে ভারতের প্রবল অস্বস্তি বেজিংকে খুশিই করছে। পাশাপাশি এই অঞ্চলের ছোট দেশগুলি আমেরিকার বাণিজ্য ও ভিসা নীতিতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে চিনের জন্য দরজা খুলছে।

কূটনৈতিক মহলের মতে, বিষয়টি এমন নয় যে গত চার বছরে সম্পূর্ণ কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিল বেজিং। বিষয়টি এমনও নয় যে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্ববাজার দখল করবে তারা। তবে পরবর্তী কোয়াড শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের আগে নতুন ভাবে ফিরে আসা বেজিংয়ের মোকাবিলা ভারতের কাছে নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন