বাঙালি তাসে ফ্যাসাদে বিজেপি

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার অনুপ্রবেশকে দীর্ঘদিন ধরেই প্রচারের হাতিয়ার করেছে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার প্রচারে গিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে সরব হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৮
Share:

মমতা বিরোধিতার প্রশ্নে মুখে কুলুপ রাজ্য বিজেপির।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসমে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বাঙালি খেদাওয়ের অভিযোগ তুলতেই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে সে রাজ্যে। সংসদে ওই ঘটনায় গত কাল বিক্ষোভও দেখিয়েছে তৃণমূল। আর এই পরিস্থিতির মধ্যে বেকায়দায় পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি।

Advertisement

রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব দিল্লিকে জানিয়েছে, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে মমতা যে ভাবে বাঙালিদের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছে, এ নিয়ে তাঁর বিরোধিতা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাঁদের যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গে ওই প্রশ্নে মমতার বিরোধিতা করা মানে বাঙালি সমাজের বিরোধিতা করা। একই কারণে কংগ্রেস বা সিপিএম কেউই মমতার বিরোধিতা করছেন না। উল্টো লোকসভায় বিষয়টি নিয়ে একযোগে সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সাংসদেরা। ফলে মমতা বিরোধিতার প্রশ্নে মুখে কুলুপ রাজ্য বিজেপির।

এর আগে দার্জিলিং প্রশ্নে গুরুঙ্গদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে সমতলের মানুষের কাছে মুখ পোড়ার জোগাড় হয়েছিল বিজেপির। দল বুঝছে এ বার বিজেপি শাসিত অসমের প্রশ্নে সরব হয়ে রাজ্য বিজেপিকে ফের একঘরে করার কৌশল নিচ্ছেন মমতা।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবার অনুপ্রবেশকে দীর্ঘদিন ধরেই প্রচারের হাতিয়ার করেছে। ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার প্রচারে গিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে সরব হন। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বরাবরই হিন্দু শরণার্থী ও মুসলিম অনুপ্রবেশকরারী— এই দু’টিকে পৃথক ভাবে চিহ্নিত করে। কিন্তু মমতা অসমে তালিকা থেকে এই বাদ পড়া দেড় কোটি মানুষের নাগরিকত্বের প্রশ্ন তুলে, একই সঙ্গে বাঙালি বিতাড়নের পুরনো অভিযোগ সামনে এনেছেন। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আজ বাংলার নেতৃত্বকে পরামর্শ দিয়েছেন, অসমে দল সুর চড়াক মমতার বিরুদ্ধে। কারণ সে রাজ্যে এই চিহ্নিতকরণে রাজনৈতিক লাভ মিলছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে ধীরে চলো নীতি নিতেই বলা হয়েছে।

তাই বাংলার বিজেপি নেতা মোহিত রায় শুক্রবার অভিযোগ করেন, ‘‘মমতার মন্তব্যে অসমের বাঙালিরা খুবই অসন্তুষ্ট। তাঁরা মনে করছেন, মমতার মন্তব্যে তাঁদের বিপদে পড়তে হতে পারে। অসমে বাঙালিদের কোনও সমস্যা হলে দায়ী থাকবেন মমতাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন