ধুঁকছে অর্থনীতি, তাই কি কাশ্মীর তাস? প্রশ্ন বিরোধীদের

তিন দিন আগেই মেহবুবা মুফতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন— অর্থনীতি যে ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে, তাতে বাস্তব সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য ফের না কাশ্মীরকে কাজে লাগানো হয়!

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০৩:১০
Share:

মেহবুবা মুফতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, অর্থনীতি যে ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে, তাতে বাস্তব সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য ফের না কাশ্মীরকে কাজে লাগানো হয়! ছবি: পিটিআই।

গাড়ির বিক্রি কি বেড়ে যাবে? না।

Advertisement

অর্থনীতি কি চাঙ্গা হবে? না।

যারা ঋণ দেবে, সেই সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির হাতে নগদ টাকা নেই। ছোট-মাঝারি শিল্প ঋণ পাচ্ছে না। তারা কি ঋণ পেতে শুরু করবে? না।

Advertisement

পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার বাড়বে? না।

তিন দিন আগেই মেহবুবা মুফতি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন— অর্থনীতি যে ভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে, তাতে বাস্তব সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য ফের না কাশ্মীরকে কাজে লাগানো হয়! আজ সংসদে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার প্রস্তাব আসার পরে বিরোধীরা বলছেন, মুফতির আশঙ্কাই সত্যি হল।

অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়া নিয়ে যে সরকারের দুশ্চিন্তা রয়েছে, আজ তা পরোক্ষে স্বীকার করে নেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও। আজ সরকারি, বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির প্রধানদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করেছেন তিনি। গাড়ি শিল্প, ছোট-মাঝারি শিল্প, কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজন মতো ঋণ যাতে পৌঁছয়, তার জন্য অনুরোধ করেছেন তাঁদের। শুধু এ-ই নয়। মঙ্গলবার ছোট-মাঝারি শিল্প, বুধবার গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রাংশ প্রস্তুতকারী সংস্থা, বৃহস্পতিতে শিল্প, শুক্রবারে শেয়ার বাজার, রবিবারে আবাসন ও ক্রেতা সংগঠনগুলির সঙ্গেও বৈঠকে বসবেন নির্মলা। ঠিক এক মাস আগে, ৫ জুলাই তিনি বাজেট পেশ করেছিলেন। তার আগেও সব মহলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এক মাসের মধ্যে ফের তাঁকে সব মহলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এ থেকেই স্পষ্ট, বাজেটে কারও চাহিদাই পূরণ হয়নি। নির্মলা মুখে দুশ্চিন্তা মানতে না চাইলেও তাঁকে আশ্বাস দিতে হয়েছে, সকলের কথা শোনার পরে অর্থ মন্ত্রক যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির অভিযোগ, এই সরকার অর্থনীতি, মানুষের জীবন-জীবিকার সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে বরাবর বিভাজনের রাজনীতি করে। এখন কাশ্মীর নিয়ে রাজনীতি করছে। সিপিআই নেতা ডি রাজার অভিযোগ, আর্থিক নীতি নিয়ে আলোচনা না করে সরকার জাতীয়তাবাদের নামে দেশে আতঙ্ক তৈরি করছে।

৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ হলে কাশ্মীরের অর্থনীতিরও কি কোনও উপকার হবে? বিজেপির যুক্তি, কাশ্মীরে মাথা পিছু উন্নয়নের জন্য যে টাকা খরচ হয়, তা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় বেশি। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ ও স্থানীয় নেতাদের দুর্নীতির জন্য সেই উন্নয়নের সুফল মেলেনি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলে উন্নয়ন হবে। কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ অবশ্য তা মানছেন না। বরং তাঁর প্রশ্ন, অমরনাথ যাত্রা থেকে কাশ্মীরের মানুষের আয় হয়। মোদী সরকার তো এ বার যাত্রা বন্ধ করে কাশ্মীরিদের আয়ের সুযোগই নষ্ট করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন