National News

স্ট্র্যাটেজিক রিজার্ভে বিপুল তেল ঢোকাচ্ছে ভারত, আপৎকালীন প্রস্তুতি শুরু?

স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভ নিয়ে বড়সড় আন্তর্জাতিক চুক্তি করল ভারত। ম্যাঙ্গালোরে ভারতের সুবিশাল ভূগর্ভস্থ তেল ভাণ্ডারের অর্ধেকটা পূরণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিল আরব আমিরশাহি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ১৯:২৪
Share:

ভারতের ভূগর্ভস্থ স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভ। ছবি: সংগৃহীত।

কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি, বিশেষত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভ গড়ে তোলা হয়। আপৎকালীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সাময়িক ভাবে যদি তেল আমদানি বন্ধ থাকে, তা হলে ওই বিশেষ তেল ভাণ্ডার খুলে দিয়ে দেশের চাহিদা সামাল দেওয়া হয়। ভারতের বর্তমান আপৎকালীন তেল ভাণ্ডারের যা আকার, তাতে সেই ভাণ্ডার পুরোপুরি পূর্ণ থাকলে ১০ দিন থেকে দু’সপ্তাহ পর্যন্ত গোটা দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব। কিন্তু ভাণ্ডার পুরোপুরি পূর্ণ নয় এখনও। যতটা বাকি, ততটাই পূরণ করে দেবে আরব আমিরশাহি। বুধবার এমনই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে দু’দেশের মধ্যে।

Advertisement

আমিরশাহির সঙ্গে ভারতের তেল-চুক্তি চিন্তায় রাখবে অনেক প্রতিবেশীকেই। ছবি: রয়টার্স।

ভারতের স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভে কম-বেশি ৩ কোটি ৭০ লক্ষ ব্যারেল অশোধিত তেল মজুত রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের তেল ভাণ্ডারে ৭৫ লক্ষ ব্যারেলেরও বেশি তেল রয়েছে। কর্নাটকের উদুপিতে রয়েছে আর একটি ভাণ্ডার। সেখানে মজুত রাখা হয়েছে ১ কোটি ৮০ লক্ষ ব্যারেলেরও বেশি তেল। কর্নাটকেরই ম্যাঙ্গালোরে তৃতীয় অয়েল রিজার্ভটি গড়ে তোলা হয়েছে। সেটিতে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ ব্যারেল অশোধিত তেল মজুত রাখায় যায়। কিন্তু রয়েছে ৬০ লক্ষ ব্যারেলের মতো। বাকি অর্ধেকটা পূরণ করার জন্য আরও প্রায় ৬০ লক্ষ ব্যারেল তেল প্রয়োজন। আরব আমিরশাহি সেই ভারতকে সরবরাহ করতে চলেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: বিতস্তা-চন্দ্রভাগার জল আটকে ভারতের সুবিশাল প্রকল্প, আতঙ্কে পাকিস্তান

এ বার প্রজানতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি ছিলেন আরব আমিরশাহির যুবরাজ শেখ মহম্মদ বিন জাভেদ আল নহিয়ান। তাঁর এই ভারত সফরেই দু’দেশ স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভ নিয়ে চুক্তিবদ্ধ হল।

২০২০ সালের মধ্যে ভারত তার আপৎকালীন তেল ভাণ্ডারকে বর্তমান আকারের সাড়ে তিন গুণে নিয়ে যেতে চায় বলে খবর। ছবি: সংগৃহীত।

আমেরিকার স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভের আকার পৃথিবীতে সবচেয়ে বড়। এই মুহূর্তে তার যা আকার, তাতে গোটা আমেরিকার দু’মাসের জ্বালানি তেলের চাহিদা সেই ভাণ্ডার মেটাতে পারে। চিনের স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভের আকারও যথেষ্ট বড়। কিন্তু সঠিক হিসেব চিন প্রকাশ করে না। বেজিং শুধু জানিয়েছে, ২০২০ সালের মধ্যে নিজেদের স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভে এতটাই অশোধিত তেল চিন জমিয়ে ফেলতে চায়, যাতে তেল আমদানি না করেই অন্তত তিন মাস গোটা চিনের চাহিদা পূরণ করা যায়। ভারতের স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভের পরিমাণ সে তুলনায় কিছুটা কম। তবে ভারতও চিনের মতোই ঘোষণা করেছে, ২০২০ সালের মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক অয়েল রিজার্ভে ১৩ কোটি ২০ লক্ষ ব্যারেল অশোধিত তেল জমিয়ে ফেলবে ভারত। অর্থাৎ ২০২০ সালে ভারতের আপৎকালীন তেল ভাণ্ডারের আকার বর্তমান আকারের প্রায় সাড়ে তিন গুণ হয়ে উঠতে চলেছে। সে ক্ষেত্রে, ভারতও অন্তত দু’মাস শুধু আপৎকালীন ভাণ্ডারের উপর নির্ভর করেই তেলের চাহিদা মিটিয়ে নিতে পারবে। সেই লক্ষ্যেই এগনোর জন্যই কি দ্রুত ম্যাঙ্গালোর অয়েল রিজার্ভের খালি অংশ পূরণ করার কাজটা সেরে ফেলতে চাইল ভারত সরকার? ওয়াকিবহাল মহল তাই মনে করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন