দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। ছবি: পিটিআই।
(দেশের প্রায় সব সংবাদ মাধ্যমে এই ‘খবর’টি প্রচারিত হয়েছিল। ‘খবর’ ছিল উল্টে গিয়ে আগুন ধরে যাওয়ায় মুজফফরনগর থেকে দিল্লি যাওয়ার পথে একটি বাসে আগুন লেগে যাওযায় বহু মানুষ জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারও একটি অনুষ্ঠানে দুর্ঘটনার খবর শুনে উপস্থিত সকলকে নিয়ে দু’ মিনিট মৌনতা পালন করেন। ঘোষণা করেন, মৃতদের পরিবার-পিছু দেওয়া হবে ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ। এই খবরটি অন্যান্যদের মতো আনন্দবাজারেও প্রচারিত হয়। কিন্তু পরে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়, ভুল খবর রটে গিয়েছিল। ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি এক জনেরও। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।)
প্রথম প্রকাশিত খবরটি অবিকল রেখে দেওয়া হল নীচে:
এক বাইক আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশ আন্তঃরাজ্য পরিবহণ সংস্থার একটি বাস উল্টে গিয়ে আগুন লাগায় জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল ২২ জনের। যদিও বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলার কোতয়া থানা এলাকার বেলবা গ্রামের কাছে, ২৮ নম্বর জাতীয় সড়কে আজ বিকেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতেরা সকলেই বিহারের মুজফ্ফরপুরের বাসিন্দা। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী দীনেশ যাদব বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। আমাদের বাহিনী সেখানে উদ্ধারের কাজ করছে। জেলাশাসকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’’
পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের বাসটি বিহারের মুজফ্ফরপুর থেকে নয়াদিল্লি যাচ্ছিল। মোতিহারি হয়ে ২৮ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে দিল্লি যাওয়ার কথা। দুর্ঘটনার সময়ে বাতানুকূল বাসটিতে ৩২ জন যাত্রী ছিলেন। বেলবা গ্রামের কাছে বৃষ্টিতে রাস্তা ভিজে গিয়েছিল। সেই সময়ে আচমকাই একটি মোটরবাইক সামনে চলে আসে। বাইক আরোহীকে বাঁচাতে গিয়েই বাসটি উল্টে গিয়ে রাস্তার পাশের খালি নয়ানজুলিতে পড়ে। সেখানে উল্টে যাওয়া অবস্থায় বাসটিতে আগুন লেগে যায়। স্থানীয় গ্রামবাসীরা প্রাথমিক ভাবে উদ্ধারে হাত লাগান। কোনও রকমে চার জনকে জীবন্ত উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলেই ১৫ জন মারা যান বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়েই জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে পৌঁছন। জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের সাহায্যেই বাসের আগুন নেভানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় থানার ওসি বিজয় সিনহা বলেন, ‘‘দেহগুলি আগুনে পুরো ঝলসে গিয়েছে। চেনার কোনও উপায় নেই। অনেকের দেহের অধিকাংশ অংশ আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে।’’ সেই দেহগুলি কোনও ভাবে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্ঘটনার পরে আগুন না লাগলে মৃতের সংখ্যা এত হত না বলেই মনে করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
মৃতদের পরিবারের সদস্যদের প্রত্যককে চার লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।