আতঙ্কে দু’চোখের পাতা এক করতে ভয় পাচ্ছে বিহার।
গত কালের ভূকম্পনে জেলায় জেলায় ভেঙেছে ঘরবাড়ি। লাফিয়ে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আজ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ৫০ জনের মৃত্যুর খবর প্রশাসনের কাছে এসেছে। মৃতদের পরিজনদের ৪ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার।
ফের কম্পনের আশঙ্কায় গত রাতে ভয়ে বাড়ি ফেরেননি রাজধানী পটনার অনেক বাসিন্দা। গাঁধী ময়দানের মতো খোলা জায়গায় রাত কাটিয়েছেন তাঁরা। আশঙ্কাকে সত্যি করে এ দিন দুপুরে ফের কেঁপেছে বিহার। তাতে আতঙ্ক কয়েক গুণ বেড়েছে। সে দিকে তাকিয়ে আগামী কাল ও মঙ্গলবার রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি করেছে প্রশাসন।
নীতীশ জানিয়েছেন, রাজ্যের অনেক মানুষ এখনও নেপালের বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছেন। তাঁদের ফিরিয়ে আনতে নেপাল সীমান্তবর্তী এলাকায় বাস পাঠানো হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গেও কথা হয়েছে নীতীশের। নেপালে আটকে থাকা রাজ্যবাসীকে উদ্ধারের জন্য কেন্দ্রের সাহায্য চেয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গত কাল ও আজ পর পর দু’দিন দুপুরে ভূকম্পনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী কাল ও মঙ্গলবার রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখমন্ত্রী জানিয়েছেন, নেপালে দুর্গতদের সাহায্যের জন্য সীমান্তবর্তী এলাকায় চিকিৎসকদের দল পাঠানো হবে। সে দেশের কেউ বিহারে চিকিৎসার জন্য এলে, নিখরচায় তাঁর চিকিৎসা করা হবে। তা ছাড়া বির্পযস্ত এলাকায় ত্রাণ হিসেবে খাবারের প্যাকেটও পাঠাবে বিহার সরকার। নীতীশ আরও জানান, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ভূকম্পে ভেঙে যাওয়া বাড়ি মেরামতির জন্য সরকারি ইঞ্জিনিয়ারদের দল গঠন করা হয়েছে। এ দিন তাঁদের নিয়ে বৈঠকও করা হয়েছে। ওই ইঞ্জিনিয়াররা বিহারের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শন করবেন। ভেঙে যাওয়া বাড়িঘর মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করবেন।
পটনায় দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের যুগ্ম সচিব সুনীল কুমার জানিয়েছেন, ভূকম্পে সব চেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে পূর্ব চম্পারণে। সেখানে ৮ জনের মারা যাওয়ার খবর মিলেছে। তা ছাড়া সীতামঢ়ী, দ্বারভাঙায় ৬ জন করে এবং সিওয়ান, লখীসরাই, আরারিয়ায় তিন জন করে মৃত্যুর খবর এসেছে। রবিবার সন্ধে পর্যন্ত ভূকম্পের বলি হয়েছেন মোট ৬২ জন। এর মধ্যে ৪৬ জনই বিহারের। বিহারের পরে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। পশ্চিমবঙ্গ ও রাজস্থানে মারা গিয়েছেন তিন জন। জখম ২৪০। রাজস্থানে ভূকম্পের শিকারদের মধ্যে রয়েছে আট বছরের একটি মেয়ে। আহতদের মধ্যে রয়েছে ৭টি শিশু।
গোর্খা জওয়ানদের ছুটি দিল ঝাড়খণ্ড
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি
বাড়িঘর তাঁদের নেপালে, দার্জিলিঙে। ভূমিকম্পে কারও বাড়ি ভেঙেছে, কেউ হারিয়েছেন আত্মীয়-বন্ধু, কেউ আবার যোগাযোগ করতে পাচ্ছেন না দেশের কারও সঙ্গেই। ঝাড়খণ্ড পুলিশে কর্মরত এমনই ৩৫ জন গোর্খা জওয়ানের পাশে দাঁড়াল প্রশাসন। তাঁদের জন্য বিশেষ ছুটি মঞ্জুর করা হল। রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, প্রয়োজনে ওই জওয়ানরা স্বল্প সুদে পাবেন ঋণও। মাওবাদী জঙ্গি মোকাবিলায় ঝাড়খণ্ডের জঙ্গল এলাকায় পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করে ঝাড়খণ্ড সশস্ত্র পুলিশ। ওই বাহিনীতেই রয়েছেন গোর্খা জওয়ানরা।