Biplab Dev

‘রায়’ নিয়ে ঢোক গিললেও বিপ্লব আক্রমণের মুখে

সোনকর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়ার পর গত কাল রাতেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সরকারি আবাসনে জরুরি বৈঠকে বসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আগরতলা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দাবড়ানিতে ঢোক গিললেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। দলীয় কোন্দলে হাবুডুবু অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হুঙ্কার দিয়েছিলেন, আগামী রবিবার এক জনসভায় তাঁর মুখ্যমন্ত্রী থাকা নিয়ে মানুষের রায় নেবেন। কিন্তু গত কাল ত্রিপুরার ভারপ্রাপ্ত বিজেপি সম্পাদক তথা সাংসদ বিনোদকুমার সোনকর স্পষ্ট জানিয়ে দেন, দলের সমস্যা দল দেখবে। বিপ্লব যেন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কর্তব্য পালন করতে থাকেন। এতেই পিছু হটতে হয়েছে বিপ্লবকে। সভা বাতিলের ঘোষণাটি অবশ্য তিনি নিজে করেননি। সাংবাদিকদের ডেকে সে কথা জানিয়েছেন উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা। প্রশাসনিক চেয়ার থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যে ভাবে দলীয় বিষয় নিয়ে ইদানীং সরব হচ্ছিলেন বিপ্লব, তা নিয়ে তীব্র সমালোচনায় মুখর এখন সরকারের শরিক ও বিরোধী দলগুলি।

Advertisement

সোনকর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অবস্থান স্পষ্ট করে দেওয়ার পর গত কাল রাতেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সরকারি আবাসনে জরুরি বৈঠকে বসেন। মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী ও দলীয় বিধায়ক মিলিয়ে ২২ জন ছিলেন সেখানে। তার পর থেকে রাজ্য বিজেপির কেউ মুখ খোলেননি। শেষে উপমুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন। নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টাখানেক পরে তা শুরু হয়। বাড়ির সামনে বেরিয়ে রাস্তায় দাঁড়ানো সাংবাদিকদের উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু জানান, নেতৃত্বের নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত সভাটি বাতিল হয়েছে।

একতরফা জনতার রায় নেওয়ার ঘোষণা করার জন্য আজ বিপ্লবের কড়া সমালোচনা করেছে সরকারের শরিক আইপিএফটি। দলের সভাপতি এবং রাজস্বমন্ত্রী নরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে মন্ত্রিসভায় আলোচনা করেননি। মুখ্যমন্ত্রী এ ভাবে একা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ভূ-ভারতে এমন ঘটনা আগে কখনও হয়নি।”

Advertisement

সরব হয়েছেন বিরোধীরাও। কংগ্রেসের সহসভাপতি তাপস দে-র মতে, কোনও সুস্থ মানসিকতার রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দল এই রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রী মহাকরণে বসে সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে দলীয় সিদ্ধান্তের ঘোষণা করেছেন। বিজেপি সংগঠন এবং তাদের পরিষদীয় দল যে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তা গত দু’দিনের ঘটনায় প্রমাণিত। বিপ্লবের উদ্দেশে তাপসের চ্যালেঞ্জ, “নিজের জনপ্রিয়তায় যদি এত আস্থা থাকে, তবে তো বিধানসভা ভেঙে দিয়ে ভোটেই জনতার রায় নিতে পারেন।”

সিপিএমের পশ্চিম জেলার সম্পাদক পবিত্র করের বক্তব্য, দলের অভ্যন্তরীণ ঝগড়াকে এ ভাবে সামনে নিয়ে আসার জন্য নেতৃত্ত্বের দাবড়ানি খেয়ে সভাটি বাতিল করতে বাধ্য হলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝতে পেরেছেন যে, এটা করলে দল হাসির খোরাক হবে। বিপ্লবকে তাই ‘সম্মানজনক পশ্চাদপসরণের পথ’ বেছে নিতে হয়েছে। পবিত্রের কথায়, “নিজেকে তিনি রাজা ভাবছেন। এই মোহ থেকেই বোধ হয় প্রকাশ্যে জনতার রায় নিতে চেয়েছিলেন। গণতন্ত্রে এই ভাবে রায় নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। সংসদীয় রাজনীতির নিয়মনীতি কিছুই জানেন না তিনি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন