শবরী-আঁচেই কেরলে মোদীকে আনছে বিজেপি

শবরীমালার আঁচেই লোকসভা ভোটের কড়াই গরম করতে চাইছে বিজেপি! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এনে উত্তাল কেরলে মেরুকরণের হাওয়া আরও তীব্র করতে চাইছে তারা।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

শবরীমালার আঁচেই লোকসভা ভোটের কড়াই গরম করতে চাইছে বিজেপি! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এনে উত্তাল কেরলে মেরুকরণের হাওয়া আরও তীব্র করতে চাইছে তারা।

Advertisement

সুপ্রিম কোর্টের আদেশে শবরীমালার দরজা মহিলাদের জন্য খুলে যাওয়ার পর থেকেই দক্ষিণী ওই রাজ্যে বিক্ষোভে নেমেছে সঙ্ঘ পরিবার, বিজেপি এবং আরও নানা হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। প্রথম দুই পূজারিনি হিসেবে মন্দিরে বিন্দু ও কনকদুর্গা পা রাখার পর থেকে বিক্ষোভ পরিণত হয়েছে হিংসা এবং সংঘর্ষে। লোকসভা ভোটের আগে এই বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের সঙ্ঘ ও বিজেপি নেতৃত্ব। এই আবহেই কেরলে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সমাবেশ থেকেই লোকসভা ভোটের প্রচারের দামামা বাজিয়ে দিতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

ঠিক হয়েছে, আগামী ১৫ ও ২৭ জানুয়ারি দু’দফায় কেরলে যাবেন মোদী। শবরীমালা মন্দির যে জেলায়, সেউ পাতানামতিট্টায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যাবে বিজেপি। তা ছাড়াও তাঁর যাওয়ার কথা কোল্লম, পালাক্কাড ও ত্রিশূরে। নববর্ষে দেওয়া টিভি সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, শবরীমালার বিষয়টি সাংবিধানিক অধিকারের নয়। প্রশ্নটা পরম্পরা রক্ষার। রাজ্য বিজেপি পরম্পরা ভাঙার জন্যই কেরলের বাম সরকারকে কাঠগ়়ড়ায় তুলে আন্দোলন করছে এবং মোদীর বার্তা দলের কর্মী-সমর্থকদের আরও চাঙ্গা করবে বলেই তাদের আশা। শাহের সফরের দিনক্ষণ অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি। জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির গোড়ায় তিনি ওই রাজ্যে যেতে পারেন বলে বিজেপি সূত্রের খবর।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি নিয়ে কোচিতে আলাদা করে বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপি এবং আরএসএসের রাজ্য নেতৃত্ব। বিজেপির রাজ্য সভাপতি পি এ শ্রীধরন পিল্লাইয়ের বক্তব্য, ‘‘হিন্দু মন্দিরের পরম্পরা ভাঙার জন্য এলডিএফ সরকার গা-জোয়ারি করেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। মোদীজি’ও আসবেন। তার পরে শবরীমালা কর্মসমিতি ১৮ জানুয়ারি রাজ্য সচিবালয়ে যে অভিযান করবে, আমরা তাকে সমর্থন করব।’’

বিজেপির প্রতিবাদকে কটাক্ষ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন অবশ্য প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘প্রথম দু’জনের পরে তো আরও মহিলারা তাঁদের অধিকার প্রয়োগ করেই শবরীমালায় ঢুকছেন। বিজেপি কি প্রতি বার একটা করে হরতাল ডাকবে?’’

বিতর্ক তাড়া করছে কেরলের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকেও। শবরীমালা প্রশ্নে সংসদে অর্ডিন্যান্স পাশ করানোর দাবি তুলছেন রাজ্যের কংগ্রেস সাংসদেরা। যার প্রেক্ষিতে সিপিএম প্রশ্ন তুলেছে, কংগ্রেসের সভাপতি কি রাহুল গাঁধী না রাহুল ঈশ্বর? আনন্দবাজারে প্রকাশিত ওই সংবাদ উদ্ধৃত করেই শবরীমালা আন্দোলনের মুখ রাহুল ঈশ্বর মন্তব্য করেছেন, ‘‘কেরল কংগ্রেসকে আমাদের পাশে থাকার সুযোগ দেওয়ার জন্য রাহুল গাঁধীকে ধন্যবাদ! এটা কংগ্রেস বনাম বিজেপির প্রশ্ন নয়। এখানে হিন্দু পরম্পরা রক্ষার প্রশ্ন জড়িত।’’ অস্বস্তির মুখে কেরলের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি পর্যবেক্ষক মুকুল ওয়াসনিক অবশ্য সর্বভারতীয় ও রাজ্য কংগ্রেসের অবস্থানের ফারাক প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর মতে, ‘সময় এলে’ বলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন