(বাঁ দিকে) রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
দু’বছর আগে, ২০২৩-এর সেপ্টেম্বরে বিজেপি একবার প্রচার শুরু করেছিল, কংগ্রেসে রাহুল গান্ধী ও প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার মধ্যে বিবাদ তৈরি হয়েছে বলে। প্রিয়ঙ্কা তখন তার জবাবে বলেছিলেন, ‘‘আমি দাদার জন্য প্রাণ দিতে পারি। দাদা আমার জন্য প্রাণ দিতে পারে।’’
দু’বছর পরে রাহুল ও প্রিয়ঙ্কার মধ্যে সম্ভাব্য ‘ফাটল’ আবিষ্কার করে গোটা বিজেপি শিবির আবারও প্রচারে নেমেছে। রাহুল-প্রিয়ঙ্কার ‘সংঘাত’ নিয়ে এ বারের জল্পনার শুরু কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদের মন্তব্যে। বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে আক্রমণে প্রিয়ঙ্কার নীরবতা নিয়ে বিজেপি প্রশ্ন তোলায় মাসুদ বলেছিলেন, প্রিয়ঙ্কাকে প্রধানমন্ত্রী করা হলেই তিনি ইন্দিরার মতো জবাব দেবেন। এর পরেই বিজেপি নেতারা অভিযোগ তোলেন, রাহুলের নেতৃত্বে বারবার পরাজয়ে হতাশ কংগ্রেসের একাংশ প্রিয়ঙ্কাকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছে। প্রিয়ঙ্কার স্বামী রবার্ট বঢরা তাতে ইন্ধন দিয়ে বলেন, অনেকেই প্রিয়ঙ্কাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান। কংগ্রেস নেতাদের মতে, বিজেপি এই সব মন্তব্যেরই ভুল ব্যাখ্যা করে অপপ্রচার করছে। বিজেপির এই প্রচারের পিছনে আরও কারণ আছে বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি। তাঁদের মতে, প্রিয়ঙ্কা সংসদের সাম্প্রতিক অধিবেশনে বন্দে মাতরম্ নিয়ে বক্তৃতা করেছেন। অধিবেশনের শেষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে চায়ের আড্ডায় যোগ দিয়েছেন। তাঁর এই সক্রিয়তা দেখে কংগ্রেস শিবিরের মতোই বিজেপিও মনে করছে, প্রিয়ঙ্কা কংগ্রেসের সংগঠনে নতুন ভূমিকায় আসবেন। তাই তারা আগেভাগে নেতিবাচক প্রচারে নেমে পড়েছে। ইদানীং দেশের অন্য কিছু রাজনৈতিক পরিবারে ভাই-বোনে সংঘাত বেধেছে। গান্ধী পরিবারেও সেই ফাটলই দেখতে চাইছে বিজেপি। যদিও কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, তার সম্ভাবনা নেই।
কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতা মনে করিয়েছেন, সম্প্রতি লালু প্রসাদের পরিবারে তেজস্বী যাদবের সঙ্গে তাঁর বোন রোহিণী আচার্যের মধ্যে সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। তেলঙ্গানায় কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের ছেলে কে টি রাম রাও এবং মেয়ে কবিতার মধ্যে, অন্ধ্রে জগন্মোহন রেড্ডির সঙ্গে তাঁর বোন শর্মিলার মধ্যেও সংঘাত রয়েছে। ডিএমকে-তে করুণানিধির পুত্র-কন্যা স্ট্যালিন ও কানিমোঝির মধ্যেও দূরত্ব আছে। শরদ পওয়ারের পরিবারে খুড়তুতো-জেঠতুতো ভাই-বোন অজিত পওয়ার ও সুপ্রিয়া সুলের মধ্যে ফাটল তৈরি হয়েছে। গান্ধী পরিবারেও ভাই-বোনের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে এমনই লড়াই হবে বলে বিজেপির আশা। কিন্তু কর্নাটকের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডি কে শিবকুমারের মন্তব্য, ‘‘প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর একমাত্র লক্ষ্য হল রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী করা।’’
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে