প্রতীকী ছবি।
নরেন্দ্র মোদী আসবেন।
সার বেঁধে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ, নিতিন গড়কড়ী, মন্ত্রী-সাংসদেরা। সকলের গলায় উত্তর-পূর্বের পরিচিত উত্তরীয়। হাতে একটি গোলাপ।
বুক চিতিয়ে এলেন প্রধানমন্ত্রী। হাসিমুখে হুড়োহুড়ি। কে আগে ফুল দেবেন তাঁকে? ছবি তোলার সময় প্রধানমন্ত্রীর পাশে কিংবা পিছনে থাকার জন্য গুঁতোগুতি। তারপরেই ‘ভিকট্রি’ চিহ্ন দেখিয়ে ছবি তুলল গোটা মোদী-বাহিনী।
কে বলবে সংসদ চত্বর? বামেদের দুর্গ তছনছ করে ছিনিয়ে নেওয়া জয়, নাগাল্যান্ড-মেঘালয়ে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলার আনন্দে (তখনও তাঁরা জানেন না, অনিশ্চয়তা তৈরি হবে রাতে) সেই চত্বরেই বেনজির ভাবে ‘বিজয়-উৎসব’ পালন করল বিজেপি। ঠিক যেভাবে ভোটের ফলপ্রকাশের পরদিনই দেশে বিজয়-উৎসবের নির্দেশ দিয়েছিলেন অমিত শাহ।
কেন এত অতি-নাটকীয়তা?
বিজেপির নেতারাই বলছেন, মোদী-শাহের নিজের গড় গুজরাতের স্মৃতি এখনও খোঁচা দিচ্ছে। আর ভোটমুখী রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের উপনির্বাচনে তো জয়ের স্বাদও মেলেনি। তার উপর ক্ষমতায় আসার সাড়ে তিন বছর পর নীরব মোদী নিয়ে দুর্নীতির তকমা! প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে যে মোদী-ম্যাজিক অস্তমিত। এরমধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে উত্তর-পূর্বই। ত্রিপুরায় বামেদের দুর্গ ভেঙ্গে নিখাদ জয় এখন সম্বল সামনের কর্নাটক বিধানসভা ভোটে। তারপর মধ্যপ্রদেশে, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়েও।
বিজেপির এক সাংসদ জানালেন, ত্রিপুরাকে পুঁজি করে এখন কর্নাটকের ভোটযুদ্ধে ঝাঁপাতে চাইছে দল। আগামিকালই সে রাজ্যে যাবেন যোগী আদিত্যনাথ। সপ্তাহান্তে উত্তর কর্নাটকে ওবিসি সম্মেলন করবেন অমিত। আর পরের সপ্তাহে খোদ প্রধানমন্ত্রীর সভা। দু’দিন পর ফের অমিত ‘বেঙ্গালুরু বাঁচাও’ র্যালিতে যোগ দেবেন। দলের সব সাংসদদের ত্রিপুরা জয়ের মন্ত্রে চাঙ্গা করতে আগামিকাল সকালে বৈঠকে বসছেন মোদী-শাহ।
কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, ত্রিপুরায় নিঃসন্দেহে বিজেপি ভাল ফল করেছে। কিন্তু উত্তর-পূর্বের সেই ছোট্ট রাজ্যের জয় দেখিয়ে বিজেপি যদি মনে করে, দক্ষিণের কর্নাটকের পাশা উল্টে দেবে, তাহলে একেবারেই ভুল। তলে তলে বিজেপিও যে সে কথা মানছে না, তা নয়। দলের এক নেতার কথায়, কর্নাটকে ভোটের দিন ঘোষণা হয়নি। দলের একটি অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা বলছে, এখনও জয়ের অবস্থায় পৌঁছয়নি বিজেপি। সে কারণে আরও কঠোর পরিশ্রম দরকার। আর সে কারণেই উত্তর-পূর্বকে হাতিয়ার করে ফলাও প্রচার হচ্ছে।