এক সময় বফর্স নিয়ে প্রথম সারিতে ছিলেন তিনি। পরবর্তী কালে বাজপেয়ী সরকারে মন্ত্রীও হয়েছিলেন। সেই অরুণ শৌরি এখন বিরোধীদের সঙ্গে গলা মিলিয়ে রাফাল নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যে ভাবে আসরে নেমেছেন, তাতে ঘুম উড়েছে বিজেপির। দিন কয়েক আগেই দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে আরও দুই বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা, যশবন্ত সিন্হা ও শত্রুঘ্ন সিন্হাকে পাশে নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাফাল-তোপ দেগেছিলেন শৌরি। কাল মুম্বইয়ে এক অনুষ্ঠানে ফের রাফাল প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘৬৪ কোটি টাকার বফর্স দুর্নীতির চেয়ে অনেক বড় দুর্নীতি ৩৫ হাজার কোটি টাকার রাফাল বিমান কেনাবেচা।’’ বিজেপির এই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ, রাফাল দুর্নীতির দায় প্রধানমন্ত্রী মোদী তথা তাঁর সচিবালয়ের।
রাফাল নিয়ে রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস এমনিতেই সুর চড়িয়েছে। তার মধ্যে নিজেদের দলেরই বিক্ষুব্ধ নেতা এ ভাবে সুর চড়ানোয় সমস্যা বেড়েছে গেরুয়া শিবিরের। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নেমে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের জবাব, ‘‘যাঁদের কোনও কাজ নেই, তাঁদের কথা শুনব? না প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথাকে গুরুত্ব দেব?’’
শৌরি অবশ্য তোপ দেগেই চলেছেন। রাফাল-তদন্তের জন্য সিএজি-কে দিয়ে ফরেন্সিক অডিটের দাবি তুলে শৌরির বক্তব্য, ওই চুক্তিতে পদের অপব্যবহার করে বেসরকারি সংস্থাকে ফায়দা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাঁর সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন যশবন্ত-শত্রুঘ্নরা। তিন নেতার অভিযোগ, ওই চুক্তি করে দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করা হচ্ছে। ১২৬টির পরিবর্তে মাত্র ৩৬টি বিমান কেনার কথা হচ্ছে। আগে ঠিক ছিল, দু’বছরেই বিমান হাতে পাওয়া যাবে। এখন শোনা যাচ্ছে চার বছরে। ফলে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
কাল মুম্বইয়ে ‘সেভ ডেমোক্রেসি, সেভ কনস্টিটিউশন’ বিতর্ক সভায় বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, মোদী সরকারের মন্ত্রীরা ঠুঁটো জগন্নাথ। তাঁদের দায়িত্ব শুধু নামেই। বাস্তবে সব সিদ্ধান্তই নেন মোদী এবং তাঁর সচিবালয়। নোট বাতিল থেকে কাশ্মীরে জোট সরকার ছাড়া— সব ক্ষেত্রেই মন্ত্রীদের অন্ধকারে রেখে মোদী একাই সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ তিন বিক্ষুব্ধ নেতার।
মোদী সরকারের আমলে গণতন্ত্র বিপন্ন হওয়ার অভিযোগও তুলেছেন যশবন্ত-শৌরিরা। তাঁদের কথায়, ‘‘গোটা দেশে ৭২টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। সোহরাবুদ্দিন মামলায় সাক্ষীরা বয়ান বদল করছেন। সিবিআইকে শাসক শিবিরের স্বার্থে ব্যবহার করা এখন স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।’’