Biplab Kumar Deb

সমাজপতি! বিপ্লব কি পিছিয়ে দিচ্ছেন রাজ্যকে

ককবরক সাহিত্য সভার সভাপতি বিকাশ রায় দেববর্মার মতে, অতীতে রাজন্য আমলে ছোট ছোট সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে সর্দারদের বেছে নেওয়া হত সমাজ পরিচালন করার স্বার্থে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ০২:০০
Share:

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। —ফাইল চিত্র।

ত্রিপুরায় সমাজপতিদের সঙ্গে আলোচনা ও তাঁদের ভাতা দেওয়ার মাধ্যমে আসলে বিদায় নেওয়া একটি ব্যবস্থাকে নতুন করে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠল। এর সমালোচনায় মুখ খুলেছেন রাজনীতির বাইরের লোকজনও। বিরোধী দলগুলিও মনে করছে, আসন্ন স্বশাসিত জেলা পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে এটি পুরোপুরি একটি রাজনৈতিক চাল। ভোটের রাজনীতি করতে গিয়ে বিজেপি ও তাদের সরকার আসলে সমাজকে পিছিয়ে দেওয়ার কাজ করছে।

Advertisement

জনজাতি গোষ্ঠীপতিদের ২০০০ টাকা করে সামাজিক ভাতা দেবার ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। সরকারি ভাবে তারা কোনও শ্রেণিভুক্ত হিসেবে ওই ভাতা পাবেন, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানানো হচ্ছে না।

ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব এখন আবার জনজাতি গোষ্ঠীপতিদের চিন্তন বৈঠকেও ডাকছেন। সম্প্রতি এমনই এক বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী যুক্তি দেন, মহারাজা বীর বিক্রমের সময়ে বিভিন্ন জনজাতির সমাজপতিদের সঙ্গে এই ধরনের আলাপ-আলোচনা করা হত। বিজেপি-আইপিএফটি জোট সরকারও জনজাতিগুলির আর্থ-সাংস্কৃতিক উন্নয়নের বিষয়ে জানতে চায় তাদেরই সমাজপতিদের মাধ্যমে।

Advertisement

ককবরক সাহিত্য সভার সভাপতি বিকাশ রায় দেববর্মার মতে, অতীতে রাজন্য আমলে ছোট ছোট সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে সর্দারদের বেছে নেওয়া হত সমাজ পরিচালন করার স্বার্থে। এই সর্দাররা তাঁদের গোষ্ঠীতে নেতৃত্ব দিতেন বা খবরদারি করতেন। বর্তমানে তাঁদের কোনও প্রভাব থাকতে পারে বলে ভাবা অনুচিত। ত্রিপুরায় কখনওই পরিকল্পনা ভিত্তিক সমাজপতি ব্যবস্থা ছিল না। পঞ্চাশের দশকেই এই প্রথা বিলীন হয়ে গিয়েছে। গত ৭০ বছরে রাজ্যের ১৯টি সম্প্রদায়ের মানুষ সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছেন, সেখানে বসবাস করছেন। এখন সর্দারের কাজ রাজনৈতিক নেতারাই করছেন। বিকাশবাবুর প্রশ্ন, “জনজাতি সমাজে উচ্চতর শিক্ষার প্রসার এবং সমাজ উন্নত ও উন্মুক্ত হয়ে ওঠার পরে সর্দারদের মান্যতা দেওয়ার বা তাঁদের অনুশাসন মেনে নেওয়ার যুক্তি কোথায়? সমাজ কি পিছন দিকে হাঁটবে?”

বিকাশবাবুদের মতো অনেকে এই প্রশ্নও তুলছেন, রাজনীতির ক্ষেত্রে শাসক শিবির হয়তো এ থেকে সাময়িক ফায়দা পেতে পারে। কিন্তু সমাজ কি সরকারের তৈরি করা এই নতুন সমাজপতিদের আধিপত্য মেনে নেবে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন