সম্মুখ সমরে নামার আগে পরস্পরের হাতের তাস বুঝে এগোতে চাইছে যুযুধান দুই শিবিরই! ত্রিপুরায় প্রার্থী তালিকা ঘোষণার জন্য তাই কয়েক দিন সময় নিচ্ছে বামফ্রন্ট ও বিজেপি।
শাসক বামেরা প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজে হাত দিয়েছিল অনেক আগেই। প্রস্তুতি ছিল, নির্বাচন কমিশন বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করলেই তারা প্রার্থীদের নাম জানিয়ে দেবে। কমিশন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ত্রিপুরায় ভোট ১৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু বামেরা এ দিনই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা না করে ২২ জানুয়ারি তা করবে বলে ঠিক করেছে। কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক সেরে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব আগরতলায় ফিরে দলের রাজ্য কমিটি ও বামফ্রন্টের বৈঠক ডেকে প্রার্থী তালিকা অনুমোদন করাবেন।
ত্রিপুরা সিপিএমে রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের যুক্তি, ‘‘নির্বাচন এমন সময় ঘোষণা হয়েছে, যখন আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকের পরে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।’’ বুধবার রাতে এবং এ দিন সকালে তালিকা নিয়েই দু’দফা বৈঠক করে বিকালে কলকাতা রওনা দিয়েছেন মানিক সরকার, বিজনবাবুরা। আনুষ্ঠানিক ভাবে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের কথা বললেও বিজেপি শিবিরের দিকে চোখ রেখেছে বামেরা। উপজাতি সংগঠন আইপিএফটি-র সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা চলছে বিজেপি নেতৃত্বের। জোটের মধ্যে আসন ভাগ বাঁটোয়ারা হলে তবেই বিজেপি-র তালিকা ঘোষণা হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির অছিলায় সিপিএমও তাই কয়েক দিন বাড়তি সময় নিচ্ছে বলে বাম সূত্রের খবর। ওই সূত্রের বক্তব্য, বামেদের তালিকার কাজ আগেই সারা থাকে। চাইলে তারা এখনই ঘোষণা করে দিতে পারতো।
আরও পড়ুন: বিনিয়োগ বনাম বাস্তবায়ন
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব এবং আইপিএফটি-র নেতা এন সি দেববর্মাকে নিয়ে বুধবার প্রথমে আগরতলায় এবং এ দিন গুয়াহাটি নিয়ে গিয়ে রাত পর্যন্ত আলোচনা চালিয়েছেন অসমের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনিই বিজেপি-র তরফে ত্রিপুরার নির্বাচনের দায়িত্বে। জোট গড়ে কর্মসূচির ঘোষণাপত্রে সই হওয়ার পরে দু’পক্ষের আসন ভাগাভাগি হবে। প্রার্থী তালিকা প্রসঙ্গে ত্রিপুরায় দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সুনীল দেওধরের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি কতগুলো আসনে লড়বে, সেটা তো এখনও ঠিক নেই। জোট চূড়ান্ত হলে আসনসংখ্যা নির্ধারণ হবে। তার পরে প্রার্থী তালিকা।’’
বাম-শাসিত ত্রিপুরায় ‘পরিবর্তনে’র হাওয়া তুলতে প্রত্যাশিত ভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ব্যবহার করবে বিজেপি। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ৩১ জানুয়ারি মেঘালয়ের পাশাপাশি ত্রিপুরাতেও সভা করবেন মোদী। তবে ৩১ তারিখ ত্রিপুরায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন বলে প্রধানমন্ত্রীর সফরের দিন বদলাতে চায় দলের একাংশ। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এক বার ঘুরে গিয়েছেন, প্রচারেও ফের যাওয়ার কথা তাঁর।