এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন অমিত শাহ। এক দিকে, পটনায় বিশ্ব যোগ দিবসের অনুষ্ঠানে সামিল হলেন। তার পর দিনভর ব্যস্ত থাকলেন বিহারে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি-বৈঠকে।
সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে কথাবার্তায় এর আগেও পটনা ঘুরে গিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু দলের সর্বভারতীয় সভাপতির এ দিনের সফর ছিল কিছুটা তাৎপর্যপূর্ণ। দলের ব্লক স্তর থেকে প্রদেশ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘সকালে ঘণ্টাতিনেক বাদ দিলে, আজ সন্ধেয় দিল্লি রওনা হওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি নির্বাচন নিয়েই নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বেশিরভাগ সময় বিহারের পরিস্থিতি নিয়ে অন্যদের কথা চুপচাপ শুনেছেন। কোনও মতামত দেননি।’’
এ দিন শহরের মইনুল হক স্টেডিয়ামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল চোখে পড়়ার মতো। মঞ্চে অমিত শাহের সঙ্গে হাজির ছিলেন বিজেপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সৌদান সিংহ। ছিলেন বিহারের পর্যবেক্ষক তথা দলের সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব। অনুষ্ঠান শেষে তাঁরা দলের রাজ্য সভাপতি মঙ্গল পাণ্ডের বাড়িতে যান। সেখানে নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাধামোহন সিংহ, রাজীবপ্রতাপ রুডি, দলীয় মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী, বিরোধী নেতা নন্দকিশোর যাদব হাজির ছিলেন। বিহারের বিভিন্ন জেলায় ৮৩ জন নেতার আলাদা বৈঠক করেন বিজেপি সভাপতি।
দলীয় সূত্রে খবর, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে দল ১৬৫ থেকে ১৮০টি আসনে লড়়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। তা নিয়েই এনডিএ-র বাকি দলগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে কখনওই ১৬৫ আসনের দাবি থেকে সরবে না বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পদে কাউকে ঘোষণা করছে না বিজেপি। সকলকে একজোট হয়ে লড়়াইয়ের পরামর্শ দিয়েছেন অমিত।
অন্য দিকে, ঝিরঝিরে বৃষ্টিতেই ব্যায়ামে মাতল রাঁচি। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাসের সঙ্গে হাজির ছিলেন হাজার দশেক মানুষ। আলো ফুটতেই ভিড় জমে মোরাবাদি ময়দানে। ছিলেন ঝাড়খণ্ড পুলিশের বড়কর্তারা। ডিজি ডি কে পাণ্ডে, এডিজি (অপারেশন) সত্যনারায়ণ প্রধান সকাল সকালই বসে পড়েন যোগাসনে। মুখ্যমন্ত্রীও পৌঁছে যান সকাল সাড়ে ছ’টাতেই। কয়েক দিন ধরে প্রশিক্ষণ নিলেও এ দিন কঠিন ব্যায়াম এড়িয়ে যান দু-এক জন মন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এক পাশে ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী রামচন্দ্র রাজবংশী। অন্য পাশে
মেয়র আশা লকড়া। আশাদেবী দক্ষতার সঙ্গেই একাধিক যোগাসন করেন। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী দাওয়াই দিলেন— ‘‘ঝাড়খণ্ডকে রোগমুক্ত রাখতে সবাইকে নিয়মিত যোগাসন করতে হবে।’’
৩৫ মিনিটে ২১ রকম আসন। তারপর চলল প্রাণায়ম। সাংবাদিক, আলোকচিত্রীদের কিন্তু কেউ ব্যায়ামে বসতে বললেন না। আড়ালে এক মন্ত্রী টিপ্পনি কাটলেন, ‘‘সাংবাদিকরাও যদি যোগাসন করতে বসেন, তবে আমাদের ছবি কে তুলবে? ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে মাঠে এসে ব্যায়াম করার কারণটা তো তা হলে মাঠেই মারা যাবে!’’