ফের ভাঙছে এনডিএ? কুশওয়াহার ক্ষীর মন্তব্যে জল্পনা তুঙ্গে

উপেন্দ্র বলেছিলেন, ‘‘যদুবংশের দুধ এবং কুশবংশের চাল মিলে গেলে ক্ষীর তৈরি হতে বেশি সময় লাগবে না।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০৫:২৫
Share:

রাজ্যের জাতপাতের সমীকরণ পাল্টে বিহারে নতুন ‘ক্ষীর রাজনীতি’ শুরু করতে চাইছেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়াহা। মণ্ডল কমিশনের প্রধান তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি পি মণ্ডলের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে গত কাল লোক সমতা পার্টির সভাপতি উপেন্দ্র কুশওয়াহার বক্তব্যে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে বিজেপি। এনডিএ-তে ‘বিদ্রোহের আঁচ’ পেয়ে বাজারে নেমেছে কংগ্রেস ও আরজেডি। উপেন্দ্র বলেছিলেন, ‘‘যদুবংশের দুধ এবং কুশবংশের চাল মিলে গেলে ক্ষীর তৈরি হতে বেশি সময় লাগবে না।’’

Advertisement

তাঁর এই বক্তব্যকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে জোর জল্পনা। তবে ফের ভাঙন ধরছে এনডিএ-তে? দিল্লিতে কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি বলেছেন, ‘‘ভোট কাছে এলে ক্ষীর আরও মিষ্টি হবে। কত বড় থালা হবে সেটাও বোঝা যাবে। এখনও তা বলার সময় আসেনি।’’ পটনায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব টুইট করেন, ‘‘সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ক্ষীর শ্রমজীবী মানুষের আজ বড় প্রয়োজন। ‘পঞ্চমেওয়া’-র স্বাস্থ্যবর্ধক গুণ শুধু শরীর নয় সুস্থ সমাজ তৈরিতেও শক্তি দেবে।’’ বিজেপি নেতারা অবশ্য মুখ খোলেননি। গোটা পরিস্থিতির ওপরে তাঁরা নজর রাখছেন বলে জানিয়েছেন।

রাজনীতির লোকজন মনে করছেন, এনডিএ-তে উপেন্দ্রর দলের অবস্থা খুব ভাল নয়। বিজেপির সঙ্গে কোনও সমস্যা না হলেও নীতীশ কুমারের সঙ্গে তাঁর বনিবনা নেই। বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ করেই জেডিইউ ছেড়েছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে লোকসভায় বিজেপি তাঁকে তিনটি আসন ছেড়েছিল। আসন রফা নিয়েও আপাতত সমস্যা নেই উপেন্দ্রর। কিন্তু তাঁর লক্ষ্য বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর পদ। কোনও রাখঢাক না করেই সে কথা বারবার তিনি ও তাঁর দলের নেতারা বলেছেন। সেই লক্ষ্যেই বিহারে ‘ক্ষীর রাজনীতি’ করেত চাইছেন উপেন্দ্র।

Advertisement

বিহারে পিছিয়ে থাক শ্রেণির ভোটের নিরিখে যাদব সম্প্রদায়ের পরেই রয়েছে উপেন্দ্র কুশওয়াহার কোয়েরি সম্প্রদায় বা কুশবংশ। লালুপ্রসাদ জেলে যাওয়ার পরে যাদবদের মধ্যে নেতা নিয়ে কিছুটা হলেও দ্বিমত তৈরি হয়েছে। লালুর দুই ছেলের বিরুদ্ধে স্থানীয় যাদব নেতাদের ক্ষোভ রয়েছে। দিনের পর দিন অপেক্ষা করে তাঁদের দেখাই পাওয়া যায় না বলেও জানিয়েছেন অনেকে। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে বিজেপি
রাজ্য সভাপতি পদে যাদব নেতা নিত্যানন্দ রায়কে বসিয়েছে। জন অধিকার পার্টি তৈরি করে মাঠে নেমেছেন লালুর দলের প্রাক্তন সাংসদ
পাপ্পু যাদব। এ বারে সেই যাদব ভোটকে নিজের কাছে টানতে চাইলেন উপেন্দ্র। সমস্ত ‘পিছড়ে বর্গ’-কে এক করে ব্রাহ্মণ ভোট কাছে টানতে পারলেই কাজ হাসিল মনে করছেন এই
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আরজেডির এক নেতার কথায়, ‘‘গোটাটাই নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের খেলা। যাদব ভোট নানা দলের ঝুলিতে ভাগ হলে বিহারের রাজনীতি মুঠোয় আসবে বিজেপির। ‘ক্ষীর রাজনীতি’-র মাধ্যমে উপেন্দ্র ঠিক সেই কাজটিই করতে চাইছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন