মীরার ‘দুর্নীতি’ তথ্য নেটে ছড়াবে বিজেপি

সনিয়া গাঁধী গত কাল মীরার নাম ঘোষণা করতেই তৎপরতা বাড়ে বিজেপি শিবিরে। অমিত শাহ ছুটে যান প্রধানমন্ত্রীর কাছে। দলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলকেও সক্রিয় করে দেওয়া হয়। তার পরেই স্থির হয়, দল দ্বিমুখী কৌশল নেবে।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০৫:০৪
Share:

মীরা কুমারকে রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী করতেই তাঁর গায়ে দুর্নীতির কালি ছিটিয়ে দিতে সক্রিয় হয়ে পড়ল বিজেপি।

Advertisement

সনিয়া গাঁধী গত কাল মীরার নাম ঘোষণা করতেই তৎপরতা বাড়ে বিজেপি শিবিরে। অমিত শাহ ছুটে যান প্রধানমন্ত্রীর কাছে। দলের সোশ্যাল মিডিয়া সেলকেও সক্রিয় করে দেওয়া হয়। তার পরেই স্থির হয়, দল দ্বিমুখী কৌশল নেবে। রাষ্ট্রপতি পদের মর্যাদা রেখে দলের শীর্ষ নেতারা আপাতত মীরার বিরুদ্ধে কুকথা বলবেন না। তবে রাজনৈতিক ভাবে আক্রমণ করে যাবেন। আর সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করা হবে মীরার দুর্নীতির কথা। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হতে এখনও তিন সপ্তাহ বাকি। তত দিনে দুর্নীতির অভিযোগ যদি দানা বাধে, তখন জল মেপে নেতারা পরবর্তী রাজনৈতিক কৌশল স্থির করবেন।

রামনাথ কোবিন্দের মনোনয়ন-পর্বকে আজ রীতিমতো উৎসবে পরিণত করেছেন নরেন্দ্র মোদী। শক্তি প্রদর্শনের সেই মঞ্চেই চন্দ্রবাবু নায়ডু, যোগী আদিত্যনাথ দাবি করেন, বিরোধীরা হারবে। মীরাকে ‘বলির পাঁঠা’ করা হয়েছে। আদিত্যনাথের মতে, কংগ্রেসের

Advertisement

দলিত-প্রেম থাকলে মীরাকে আগেই কেন প্রার্থী করেনি?

এই রাজনৈতিক আক্রমণের মুখে কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘এটি আদর্শের লড়াই। ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে একজোট হয়ে মীরা কুমারকে সমর্থন করা উচিত।’’ জগজীবন রামের কন্যা মীরা নিজেও বলেন, ‘আদর্শের ভিত্তিতেই একজোট হয়ে’ তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে।

কিন্তু এই রাজনৈতিক আক্রমণের পাশাপাশি মীরার দুর্নীতির খতিয়ানও তৈরি করছে বিজেপি। দলের এক সূত্রের মতে, মীরা যখন লোকসভার স্পিকার ছিলেন, সেই সময়ই অভিযোগ উঠেছিল প্রতি ৩৭ দিনে তিনি বিদেশ সফর করতেন। আর সব থেকে বেশি সফর করেছিলেন সুইৎজারল্যান্ডে। বিজেপির প্রশ্ন, কেন বিশেষ ওই দেশটিতেই যেতে পছন্দ করতেন বারবার? মীরা ১০ কোটি টাকার বেশি খরচ করেছিলেন সফরে। বিদেশিদের উপহার দেওয়ার জন্যেও রাজকোষ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। সংসদের বাড়তি ভবন নির্মাণে দুর্নীতির যে অভিযোগ রয়েছে, তারও খতিয়ানও তৈরি হচ্ছে।

আরও আছে। প্রাক্তন উপপ্রধানমন্ত্রী জগজীবন রাম মারা গিয়েছিলেন ১৯৮৬-তে। ২০০৯ সালে লোকসভার স্পিকার হওয়ার পরেও মীরা বাবার নামে বরাদ্দ করা দিল্লির বাড়িটি কব্জা করে রেখেছিলেন। ইউপিএ আমলে নগরোন্নয়ন মন্ত্রী কমল নাথ সেই বাড়ির প্রায় দু’কোটি টাকা ভাড়া মাফ করেছিলেন সনিয়ার নির্দেশে। সে সবও সামনে আনা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মীরাকে অবশ্য বিজেপি আগেও আক্রমণ করছে। তবে রাজনৈতিক ভাবে। গত লোকসভা ভোটের সময়ে মীরার পুরনো নির্বাচনী কেন্দ্র সাসারামে গিয়েও মোদী অভিযোগ আনেন, স্পিকারের মতো উঁচু পদে বসেও নিজের কেন্দ্রের প্রকল্পগুলির কাজ সম্পূর্ণ না করতে পারেননি।

কিন্তু এ বারের আক্রমণটা যে মাত্রা নিতে চলেছে তা নিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য, বিজেপির ‘ডার্টি সেল’ এই ধরনের কাজ করতে ‘মাহির’। রাজনৈতিক মতভেদ যা-ই থাকুক, রাষ্ট্রপতি পদের মর্যাদাকে এ ভাবে খর্ব করা উচিত নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন