ফাইল চিত্র।
অস্থিকলস নিয়ে কেউ হাসছেন, কেউ নদীতে কলস ছুড়ে ফেলছেন, কেউ কলস ভাসাতে গিয়ে নিজেই ডিগবাজি খেয়ে জলে পড়ে যাচ্ছেন!
দেশের সব প্রান্তে প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ীর অস্থিকলস বিজেপি নেতাদের হাতে হাতে পৌঁছে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। তাঁরা বাজপেয়ীকে সামনে রেখে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। কিন্তু সেটা করতে গিয়ে বিজেপি নেতাদের এমন নানা কীর্তিতে দানা বাঁধছে বিতর্ক।
বাজপেয়ীর ভাইঝি করুণা শুক্ল প্রথম দিনেই প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছেন বাজপেয়ীকে নিয়ে বিজেপির রাজনীতিতে। এরই মধ্যে ‘বিজেপি ইনসাইডার’ নামে এক টুইটারে আজ লেখা হয়েছে,
চিতাভস্ম নিয়ে বিজেপির রাজনীতি দেখে পরিবারের লোকেরা ব্যথিত। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের ‘বস’ বলেছেন, যদি এর বিরোধ করেন তাঁরা, তা হলে বাজপেয়ীর জামাই রঞ্জন ভট্টাচার্যের ফাইল খোলা হবে। এই ‘বস’ কে, তা নিয়ে যথারীতি গুঞ্জন গুরু হয়েছে।
এই টুইটারের নেপথ্যে কারা, এ সবের সত্যতাই বা কতটা, সে সব নিয়ে বিজেপি কখনওই কোনও মন্তব্য করেনি। কিন্তু অনেক সময় বিজেপির হাঁড়ির খবর এরা দিয়ে থাকে। যা বহু ক্ষেত্রে মিলেও যায়। কংগ্রেসের নেতা শক্তিসিন গাহিলের কথায়, ‘‘একেবারেই আশ্চর্যের খবর নয়। অটল বিহারী বাজপেয়ী সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন। কিন্তু তিনি জীবিত থাকতে মোদী তাঁকে গুরুত্ব দেননি। প্রয়াণের পরে ভরপুর রাজনীতি শুরু করেছেন। অন্তত বাজপেয়ীকে তো ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি থেকে রেহাই দিতেন!’’
আজও রেডিওর মাসিক ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে বাজপেয়ীকে নিয়ে দীর্ঘ সময় ব্যয় করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের জন্য পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশ থেকে সবথেকে বেশি অনুরোধ এসেছে বাজপেয়ীকে নিয়ে কথা বলার জন্য। মোদীও তাই জানালেন, ১৪ বছর আগে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়া ও প্রায় দশ বছরের মতো অন্তরালে থাকার পরেও বাজপেয়ীর মৃত্যুর পর তাঁর বিশাল ব্যক্তিত্ব সামনে এসেছে। জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী, সংবেদনশীল লেখক, কবি, উৎকৃষ্ট সাংসদ, মুখ্যধারায় সুশাসনকে নিয়ে আসার ব্যাপারে সকলেই মন্তব্য করেছেন।
এর সঙ্গেই রাজ্য মন্ত্রিসভাগুলির আকার বেধে দেওয়া, দলবদল বিরোধী আইনকে শক্ত করা, বাজেটের সময় বদলে ফেলে আর এক ‘স্বাধীনতা’ আনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাজপেয়ীর অন্য অবদানগুলিও মেলে ধরেন মোদী। এর সঙ্গেই ফের টেনে আনেন এক সঙ্গে লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গ।
বিজেপি এখানেই থামেনি। করুণা শুক্ল-সহ বিরোধীদের সমালোচনার ঠেকাতে বাজপেয়ীরই আর এক ভাইঝি কান্তি মিশ্রকে সামনে এনেছে তারা। তিনি বলেন, ‘‘অটলজি তো আর শুধু একজনের নয়। গোটা দেশের। প্রত্যেকে দিল্লিতে যেতে পারেন না। তাঁদের জন্য অস্থিকলস রাজ্যে গেলে বাকিরাও শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।’’