National News

দেদার ছাড়েও বিশ্ব বইমেলার শেষ দিনে জমল না বিক্রিবাটা

ভিড় যথেষ্ট হলেও বিক্রি তেমন নেই— এমন আশ্চর্য চিত্র চলতি বছরের বিশ্ব বইমেলায়। নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে বিশ্ব বইমেলা প্রাঙ্গনে মেলার শেষতম দিনে বাংলা-সহ সমস্ত আঞ্চলিক ভাষার বই বিক্রেতাদের কথায় ফুটে উঠল একরাশ অভিমান।

Advertisement

রিমি মুৎসুদ্দি

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ ২২:০৩
Share:

শেষ দিনে পাঠকদের ভিড়। ছবি: লেখক।

ভিড় যথেষ্ট হলেও বিক্রি তেমন নেই— এমন আশ্চর্য চিত্র চলতি বছরের বিশ্ব বইমেলায়।

Advertisement

নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানে বিশ্ব বইমেলা প্রাঙ্গনে মেলার শেষতম দিনে বাংলা-সহ সমস্ত আঞ্চলিক ভাষার বই বিক্রেতাদের কথায় ফুটে উঠল একরাশ অভিমান। “সারা দেশ জুড়েই তো নগদের হাহাকার। বই বিক্রি হবে কী ভাবে? এত দূর থেকে আসা-যাওয়াই সার হল।” ফেরার পথে হতাশা চেপে রাখতে পারলেন না কলকাতা থেকে আসা এক প্রকাশনী সংস্থার কর্মী। একই ক্ষোভ ও হতাশা অন্যান্য ছোট আঞ্চলিক ভাষার স্টলগুলোতেও কর্মীদের কথাবার্তায় প্রকাশ পাচ্ছে।

আরও পড়ুন

Advertisement

৩৫০০ চেয়ে এটিএম থেকে মিলল ৭০ হাজার!

স্বস্তিতে নেই দরিয়াগঞ্জের বই বাজারের বিক্রেতারাও। শেষ দিনে বইয়ের দামে দেদার ছাড় থাকলেও চলতি বছর বই বিক্রি তেমন হয়নি। শহরের বইপ্রেমী মানুষ এই শেষ দিনেই বিশেষ ছাড়ের জন্য বইমেলায় ভিড় করেন। এই ছবি শুধু দিল্লি নয়, বিশ্বের যে কোন প্রান্তের বইমেলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

আড়াই হাজারেরও বেশি স্টল জুড়ে হিন্দি, ইংরেজি ও প্রায় ২০টি আঞ্চলিক ভাষার বই সাজানো রয়েছে। নগদবিহীন অর্থনীতিতে শহরের মানুষ কিছুটা মানিয়ে নিলেও প্রযুক্তিগত অসুবিধার জন্য বেশির ভাগ বিক্রেতাই নগদে বই বিক্রি করছেন। ফলে ইচ্ছে থাকলেও ক্রেতাদের বড় প্রকাশনা সংস্থা অর্থাৎ সেই হোয়াইট কলার পাবলিশার্সদের থেকেই ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড অথবা পেটিএম ব্যবহার করে বই কিনতে হচ্ছে। অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট, স্ন্যাপডিল— এই ই-বিক্রেতাদের সঙ্গে টক্কর দিতেই প্রায় প্রতিটি প্রকাশনা সংস্থা বইয়ের দামে দেদার ছাড় দিয়েছিল। ফলে বইপ্রেমীদের উৎসাহ বেশ খানিকটা বেড়ে গিয়েছিল।

বহু পাঠকই দুষ্প্রাপ্য বইয়ের খোঁজ করেন দরিয়াগঞ্জের বই বিক্রেতাদের স্টলে। এ বারেও তাতে বদল ঘটেনি। বেশ কয়েকটা মনের মত বই খুঁজে পেয়ে আনন্দে উচ্ছল নয়ডা থেকে আসা গৃহবধূ কৃতী মেহরা। পাঁচ-ছ’টা প্রিয় বই হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কার্ডে দাম মেটানোর জন্য। বইয়ের স্টলে থাকা যুবকটি তাঁকে জানালেন, কার্ড ব্যবহার করার উপায় নেই, নগদেই কিনতে হবে বইগুলো। ছ’টা পচ্ছন্দের বই শেষ পর্যন্ত দুটোয় নেমে প্যাকেটবন্দি হল। ইচ্ছে থাকলেও ক্রেতারা মন খুলে নগদে বই কিনতে পারছেন না।

আরও পড়ুন

যে কোনও সময় ভারত মহাসাগরে ঢুকতে পারে চিন: মার্কিন সতর্কবার্তা

বাংলা থেকে নয়াদিল্লি বইমেলায় যোগদান করতে প্রায় ১০টি প্রকাশনী সংস্থা এসেছিল। এদের মধ্যে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড থেকে শুরু করে কিছু লিটল ম্যাগাজিন পত্রিকায়ও হাজির ছিল। ত্রিপুরা থেকে বাংলা বইয়ের সম্ভার নিয়ে বইমেলায় এসেছিল ত্রিপুরা পাবলিশার্স গিল্ড। বাংলা বইয়ের উৎসাহী পাঠকদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো ছিল। “এখন তো অ্যামাজন ফ্লিপকার্ট, স্ন্যাপডিলের সৌজন্যে বাড়িতে বসেই যে কোনও বই পাওয়া যায়। তবু প্রবাসে বইমেলায় আসতে বিশেষত বাংলা বইয়ের স্টলে আসতে সব সময়ই ভাল লাগে।” জানালেন গুরুগ্রাম থেকে আসা এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী দেবস্মিতা চক্রবর্তী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন