‘পদ্মাবতী’ নিয়ে উভয়সঙ্কটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এত দিন দেশের ধর্মনিরপেক্ষ শিবির প্রশ্ন তুলছিল, দেশ উত্তাল কিন্তু তিনি চুপ কেন! আর আজ ব্রিটেনে ছবিটি ছাড়পত্র পাওয়ার পর করণী সেনাও সেই একই প্রশ্ন করছে। তাদেরও প্রশ্ন, মোদী কেন নিশ্চুপ!
রাজপুত ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগে একাধিক বিজেপিশাসিত রাজ্য ঘোষণা করেছে, ছবিটি তারা দেখাতে দেবে না। মোদীর নিজের রাজ্য গুজরাতও সেই দলে আছে। সেই সঙ্গে জয়পুরের রাজপুত সংগঠন করণী সেনার হুমকি, সঞ্জয় লীলা ভংসালীর এই ছবি মুক্তি পেলে আগুন জ্বলবে দেশে। বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীরা কার্যত তাদেরই পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, হিন্দু ভাবাবেগ জাগিয়ে তুলে মেরুকরণের রাজনীতি করছেন মোদী। তাই রা কাড়ছেন না বিষয়টি নিয়ে। বিজেপি-র শত্রুঘ্ন সিনহা পর্যন্ত টুইট করে বলেছেন, ‘‘আমাদের জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীর মুখে বাক্যি নেই কেন! অনেক তো হল।’’
আরও পড়ুন: মানিককে অফিসেই ঢুকতে দিল না বিজেপি
ভারতে ‘পদ্মাবতী’ এখনও সেন্সরের ছাড়পত্র পায়নি। তার আগেই আগাম হুমকি দিয়ে রাখছে রাজ্যগুলি। এরই মধ্যে ব্রিটেনের সেন্সর বোর্ড আজ কোনও রকম কাটছাঁট ছাড়াই ছবিটিকে ছাড়পত্র দিয়েছে। তার ফলে এখন ভিনদেশে ছবিটির মুক্তি আটকানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে মামলাও দায়ের হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু করণী সেনা তাতেই সন্তুষ্ট নয়। তারা চাইছে, মোদী সরাসরি তাদের সমর্থনে মুখ খুলুন। ব্রিটেনকে বলুন, ছবিটা না দেখাতে। করণী সেনা সভাপতি লোকেন্দ্র সিংহ কালভি এ দিন বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কেন চুপ করে বসে আছেন? কূটনৈতিক স্তরে কেন ব্রিটেনের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে না এই ছবিটি বন্ধ করা নিয়ে? কেনই বা অনাবাসী ভারতীয়দের কাজে লাগানো হচ্ছে না?’’
ঘটনা হল, বিজেপির একটা বড় অংশ আবার মনে করছে, ব্রিটেনে ছবি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে সরব হলে আন্তর্জাতিক স্তরে ভুল সংকেত যাবে। তাই আপাতত মোদী চুপই আছেন। কিন্তু দু’দিক থেকেই তোপের মুখে পড়েছেন। বিরোধী নেতারা কৌতুকের সুরে বলছেন, এ ভাবে যে ফ্যাসাদে ফেলবে ব্রিটেন, সেটা হিসেবের মধ্যে ছিল না ‘ভূপর্যটক’ মোদীর!