সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নজরদারি। —ফাইল চিত্র।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে উত্তাল বাংলাদেশ। শুক্রবার থেকে শাহবাগে এই দাবিতে কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারও জানিয়েছে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে তারা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অসম এবং পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নজরদারি ব্যবস্থা পর্যালোচনা শুরু করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। সংবাদ সংস্থা পিটিআই অনুসারে, শনিবার বিএসএফ জানিয়েছে, বাংলাদেশের অস্থির পরিস্থিতির মাঝে সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রস্তুতি পর্যালোচনা শুরু হয়েছে।
বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল মহেশকুমার অগরওয়াল শুক্রবার তিন দিনের সফরে বাহিনীর গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন শুরু করেছেন। এই সফরে অসমের ধুবরি জেলায় এবং পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অঞ্চল পরিদর্শনের কথা রয়েছে তাঁর। গোপালপুর, কোচবিহার এবং ধুবরি এলাকায় বিএসএফের দফতরে বাহিনীর কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। পরে বিএসএফের গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ার থেকে বিবৃতিও প্রকাশ করা হয়। পিটিআই অনুসারে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের অস্থিরতা এবং ভারত-পাক সীমান্ত পরিস্থিতির জন্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বাহিনীর কর্তাদের। ওই সমস্যাগুলি সমাধানের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। অনুপ্রবেশ রোধ, সীমান্ত পেরিয়ে অপরাধমূলক কার্যকলাপ বন্ধ করার কৌশলগুলি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বাংলাদেশে গত বছর শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠতে শুরু করেছিল সে দেশের অন্দরে। আওয়ামী লীগের ছাত্রশাখা বাংলাদেশ ছাত্র লীগকে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে ঘোষণা করেছে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তেমন কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হয়নি। সম্প্রতি বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে টানা তিন দিন ধরে কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার থেকে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ নামে একটি কর্মসূচিও শুরু করেছে তারা।
এই আবহে শুক্রবার বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস উইং থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জনগণের পক্ষ থেকে ‘স্বৈরশাসন ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগে’ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার যে দাবি উঠেছে, তা সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আশ্বাসও দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।