বিনা প্ররোচনায় সংঘর্ষ বিরতি ভেঙে যে ভাবে এক বিএসএফ জওয়ানকে খুন করেছে পাকিস্তান, তার বদলা নিতেই সাম্বা সেক্টরে পাল্টা আঘাত হানা হয়েছে। সাফ জানিয়েছেন বিএসএফ কর্তারা। —ফাইল চিত্র।
পাক রেঞ্জার্সের গুলিতে বাঙালি বিএসএফ জওয়ানের মৃত্যুর জবরদস্ত ‘বদলা’ নিল ভারত। বিএসএফ-এর পাল্টা আঘাতে মৃত্যু হল রেঞ্জার্সের ১০ থেকে ১২ জন জওয়ানের। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানের ৫টি সীমান্ত চৌকি। ভারতীয় বাহিনীর গোলাবর্ষণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের ৩টি মর্টার পজিশনও।
বিএসএফ সূত্রেই এই গোলাবর্ষণের কথা জানানো হয়েছে। গত মধ্যরাত থেকে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু করে বিএসএফ। জম্মু-কাশ্মীরের সাম্বা সেক্টর থেকে এই আঘাত হানা হয়েছে বলে বিএসএফ-এর তরফে জানানো হয়েছে।
গতকালই পাক বাহিনী সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালিয়েছিল। শুধু গোলাবর্ষণ নয়, বিএসএফ জওয়ানদের নির্দিষ্ট করে নিশানা বানানোর চেষ্টা হয় স্নাইপার শটের মাধ্যমে। তাতেই মৃত্যু হয় হীরানগর সাব-সেক্টরে কর্মরত বাঙালি বিএসএফ জওয়ান রাধাপদ হাজরার। গতকাল ওই জওয়ানের জন্মদিনও ছিল।
আরও পড়ুন:
• আমার বোতাম বেশি বড়: ট্রাম্প
• সব সাহায্যই বন্ধের হুমকি পাকিস্তানকে
বিকেলে পাক রেঞ্জার্সের পরিকল্পিত হামলার পর মধ্যরাত থেকেই তীব্র পাল্টা আঘাত হানতে শুরু করে বিএসএফ। সাম্বা সেক্টর থেকে ভারী গোলাবর্ষণ শুরু হয়। বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক সীমান্তের ও পারে পাক রেঞ্জার্সের অন্তত ৪টি পোস্ট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে ৩টি মর্টার পজিশনও, যেখান থেকে নিয়মিত মর্টার ছুড়ত পাক বাহিনী।
এই সাম্বা সেক্টর থেকে পাল্টা আঘাত হেনেই পাক পরিকাঠামো গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিএসএফ। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
বিএসএফ-এর এই বিধ্বংসী আঘাতেই পাক বাহিনীর ১০-১২ জন সদস্যের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাধাপদ হাজরার মৃত্যুর বদলা নিতেই এই হামলা, এমনই জানানো হয়েছে বিএসএফ সূত্রে। আইজি পদমর্যাদার এক অফিসার জানিয়েছেন, হেড কনস্টেবল রাধাপদ হাজরার গায়ে গুলি লাগার পর থেকেই উপযুক্ত জবাব দেওয়া শুরু হয়েছিল। পাক বাহিনীর কত জন নিহত হয়েছে, সে বিষয়ে বিএসএফ কর্তা মুখ খোলেননি। তবে জানিয়েছেন, রেঞ্জার্সের সীমান্ত চৌকিগুলির বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং জীবনহানির সংখ্যাও কম নয়।
পাকিস্তানের মর্টার পজিশনগুলিকে চিহ্নিত করে বিএসএফ আঘাত হেনেছে বলেও বাহিনী সূত্রে জানানো হয়েছে। ওই মর্টার পজিশনগুলি থেকেই মর্টার ছোড়া হচ্ছিল। সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে যে জঙ্গিরা, তাদের কভায় ফায়ার দিতেই পাকিস্তান অধিকাংশ সময়ে এই ধরনের গোলাবর্ষণ চালায়। তাই শুধু জওয়ানের মৃত্যুর ‘বদলা’ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকছে না বাহিনী। আন্তর্জাতিক সীমান্তে এবং নিয়ন্ত্রণরেখায় সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালেই আর্নিয়া সেক্টরে এক অনুপ্রবেশকারীকে খতম করেছে ভারতীয় বাহিনী।