গুলিতে ছিঁড়ল বিদ্যুতের তার, অসমে মৃত ১১

এক গুলিতেই মৃত্যু হল ১১ জনের। খুনের ঘটনায় ধৃত ৩ জনকে লক-আপ থেকে ছিনিয়ে নিতে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে থানায় চড়াও হয়েছিল তিনসুকিয়ার পেঙেরি এলাকার আদিবাসীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৫৮
Share:

এক গুলিতেই মৃত্যু হল ১১ জনের।

Advertisement

খুনের ঘটনায় ধৃত ৩ জনকে লক-আপ থেকে ছিনিয়ে নিতে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে থানায় চড়াও হয়েছিল তিনসুকিয়ার পেঙেরি এলাকার আদিবাসীরা। উন্মত্ত ভিড় হঠাতে শূন্যে গুলি চালায় পুলিশ। গুলির আঘাতে ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে বিদ্যুতের ‘হাই-টেনশন’ তার। তাতে ঝলসে যান বিক্ষোভকারীদের অনেকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১০ জনের। গুলিবিদ্ধ এক জন পরে হাসপাতালে মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গুলির আওয়াজে হুড়মুড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করেন থানার সামনে জড়ো হওয়া আদিবাসী পুরুষ-মহিলারা। আচমকা প্রচণ্ড আওয়াজ হয়। আগুনের ফুলকি, ধোঁয়ায় ভরে যায় গোটা এলাকা। সঙ্গে আর্তনাদ। বৃষ্টিতে ভিজে থাকা শরীরে বিদ্যুতের ‘ছোবলে’ দগ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকেন অনেকে। ঘটনার সূত্রপাত গত ৬ এপ্রিল। পেঙেরি এলাকার নলিনীগাঁও থেকে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা সুনি গৌড় (৫৫), তাঁর ছেলে দেবারু গৌড় (২৩) ও পুত্রবধূ লখিরানি গৌড়কে (১৮) অপহরণ করে। ছেলে কোনওমতে পালিয়ে এলেও সুনি ও লখিরানির সন্ধান মেলেনি। তিন দিন আগে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। তার পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।

Advertisement

পুলিশ তদন্তে নেমে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে তিন জন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাদের ছিনিয়ে নিতেই এ দিন সকালে হাজার দু’য়েক আদিবাসী পেঙেরি থানা ঘেরাও করে। অনেকের হাতে ছিল
দা, কুড়ুল। এসপি মুগ্ধজ্যোতি মহন্ত জানান, পেঙেরি তিনিয়ালিতে প্রথমে ব্যারিকেড করে প্রতিবাদকারীদের আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। জনতা তা ভেঙে এগিয়ে যায়। তখনও পুলিশ লাঠি চালায়নি। পেঙেরি থানার পুলিশ জনতার দাবি মেনে ধৃত তিন জনকে বের করে না দেওয়ায়, উত্তেজিত এলাকাবাসী পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। পুলিশ লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হঠানোর চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আদিবাসীরা থানা ভাঙচুর করতে শুরু করেন। ভিড় হঠাতে এ কে-৪৭ রাইফেল থেকে শূন্যে গুলি চালাতে থাকে পুলিশ। তখনই একটি গুলি উচ্চ-বিদ্যুৎবাহী তারে লাগে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলেই তড়িদাহত হয়ে ১০ জনের মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন মহিলা। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ও গুলিতে জখম হন ২০ জন। পরে গুলিবিদ্ধ এক জন হাসপাতালে মারা যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন