দিল্লিও কি তবে কাশ্মীর! ইন্টারনেট বন্ধে ক্ষোভ

বিক্ষোভের খবর যাতে সমাজমাধ্যমে না ছড়ায়, সে জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। 

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৮
Share:

সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদে বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: রয়টার্স

ইন্টারনেট বন্ধ। তাও খাস দেশের রাজধানীতে। তার প্রতিবাদ আছড়ে পড়ল ইন্টারনেটেই!

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে থাকে নয়াদিল্লিতে মোবাইল পরিষেবা এবং মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর। নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ দিন নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভ-কর্মসূচি ছিল। অভিযোগ, সেই বিক্ষোভের খবর যাতে সমাজমাধ্যমে না ছড়ায়, সে জন্যই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এয়ারটেলের তরফে সকালেই টুইট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশেই তাঁরা কিছু জায়গায় পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদের গ্রাহক পরিষেবা বিভাগের বেশ কয়েকটি টুইটে তা বিস্তারিত লেখা হলেও পরে তা মুছে দেওয়া হয়। তবে ভারতী এয়ারটেলের চেয়ারম্যান সুনীল মিত্তল নিজেই পরে বলেন, ‘‘সরকার পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা সেই নির্দেশ মেনে চলছি।’’ ভোডাফোনও স্বীকার করে, দিল্লির বেশ কিছু জায়গায় তাদের পরিষেবা বন্ধ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, পুলিশের নির্দেশে দিল্লির বেশ কিছু জায়গায় পরিষেবা বন্ধ রেখেছে রিলায়্যান্স জিয়ো-ও।

Advertisement

টুইটারে #ইন্টারনেটশাটডাউন হ্যাশট্যাগে ক্ষোভ উগরে দেন নেটিজ়েনরা। দীর্ঘক্ষণ ট্রেন্ডিং ছিল #ইন্টারনেটশাটডাউন। কাশ্মীরে টানা কয়েক মাস ইন্টারনেট বন্ধের প্রসঙ্গ টেনে অনেকেই টুইটারে লেখেন, ‘‘কাশ্মীরকে স্বাভাবিক করতে গিয়ে দিল্লিকেও কাশ্মীর হতে হল।’’ নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে দেশের একাধিক জায়গাতেই এখন ইন্টারনেট বন্ধ। সেই ম্যাপও ছড়িয়ে পড়ে টুইটারে। সেই প্রসঙ্গ টেনেই একজনের ব্যঙ্গোক্তি, ‘‘এ বার কেবল বরফ পড়া বাকি। তা হলেই গোটা দেশ কাশ্মীর!’’

টুইটারে আবার ছড়িয়ে পড়ে একটি মার্কিন পত্রিকার সমীক্ষার তথ্য। ২০১৬-র জানুয়ারি থেকে ২০১৮-র মে মাসের মধ্যের ওই সমীক্ষার দাবি, ইন্টারনেট বন্ধ করার সংখ্যার নিরিখে ভারতের স্থান সর্বোচ্চ। সেই সংখ্যা ১৫৪। তালিকায় ভারত

ছাড়িয়ে গিয়েছে পাকিস্তান, ইরান, সিরিয়াকে। ২০১৮-র ১৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করেছিলেন, ‘‘আমি চাই, এই সরকারের সমালোচনা হোক। সমালোচনাই গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে।’’ ওই উক্তিকে উদ্ধৃত করে অনেকে প্রশ্ন তোলেন, কেন বিক্ষোভ ঠেকাতে ইন্টারনেট বন্ধ করা হচ্ছে? এই পরিস্থিতিকে জরুরি অবস্থার সঙ্গে তুলনা করে #ইমার্জেন্সি২১০৯ হ্যাশট্যাগে ক্ষোভ উগরে দেন নেটিজ়েনরা। রাজধানীর বিক্ষোভে পোস্টার দেখা যায়, ‘শাটডাউন ফ্যাসিজম, নট ইন্টারনেট।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন