ইয়াসিনের মেসেজের সূত্র ধরেই এনআইএ জেরার মুখে দিল্লির বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ

এনআইএ সূত্রে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসে অর্থ সাহায্য সংক্রান্ত ২০০৭ সালের একটি মামলা গত বছর হাতে পেয়েছে তারা। সেই মামলার তদন্তে নেমেই গোয়েন্দাদের হাতে আসে একটি মেসেজ। উপেন্দ্র কলকে পাঠানো ইয়াসিন মালিকের ওই মেসেজের একটি অংশে লেখা ছিল ‘ব্লাড রিপোর্ট ভ্যালু আইএনআর ২.৭৮’।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৯ ২১:৪৫
Share:

এনআইএ সূত্রে খবর, উপেন্দ্র কলকে পাঠানো ইয়াসিনের একটি মেসেজের সূত্র ধরেই ওই চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদীদের তহবিল সংক্রান্ত মামলায় এ বার ডেকে পাঠানো হল উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিকের ব্যক্তিগত চিকিৎসককে। দিল্লির বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ তথা বাত্রা হাসপাতালের চেয়ারম্যান উপেন্দ্র কলকে শুক্রবার ডেকে পাঠানো হয় নয়াদিল্লিতে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র সদর দফতরে। এনআইএ সূত্রে খবর, উপেন্দ্র কলকে পাঠানো ইয়াসিনের একটি মেসেজের সূত্র ধরেই ওই চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

Advertisement

এনআইএ সূত্রে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসে অর্থ সাহায্য সংক্রান্ত ২০০৭ সালের একটি মামলা গত বছর হাতে পেয়েছে তারা। সেই মামলার তদন্তে নেমেই গোয়েন্দাদের হাতে আসে একটি মেসেজ। উপেন্দ্র কলকে পাঠানো ইয়াসিন মালিকের ওই মেসেজের একটি অংশে লেখা ছিল ‘ব্লাড রিপোর্ট ভ্যালু আইএনআর ২.৭৮’। বিষয়টি কী তা জানতেই উপেন্দ্রকে তলব করা হয়েছিল। সেখানে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তাঁকে জেরা করেন তদন্তকারীরা। ইয়াসিন মালিকের সঙ্গে উপেন্দ্র কল কী নিয়ে কথা বলেছিলেন, তা-ও জানতে চান গোয়েন্দারা। এমনকি কাশ্মীরে হিংসায় মদত জোগাতে টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে তাঁ সঙ্গে ইয়াসিনের কথা হয়েছিল কি না, এমন প্রশ্নও করা হয়।

জেরা শেষে বাইরে বেরিয়ে উপেন্দ্র জানান, তিনি গোয়েন্দাদের যাবতীয় প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। গোয়েন্দাদের তিনি জানিয়েছেন, ইয়াসিন মালিকের ব্যক্তিগত চিকিৎসক তিনি। তাই রক্ত পরীক্ষার কোনও রিপোর্ট পাঠিয়ে থাকতে পারেন ইয়াসিন। তাতেই ‘ব্লাড রিপোর্ট ভ্যালু আইএনআর ২.৭৮’ লেখা ছিল। কিন্তু এই ‘আইএনআর’-এর অর্থ টাকা নয়, বরং ইন্টারন্যাশনালাইজড নর্মালাইজড রেশিয়ো, যার মাধ্যমে রক্ত জমাট বাঁধতে কত সময় লাগে, তা নির্ণয় করা হয়। এর পরেও বেশ খানিক ক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যান তদন্তকারীরা। এমনটাই জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক।

Advertisement

এনআইএ-র দফতর থেকে বেরিয়ে উপেন্দ্র কল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘জঙ্গি সংগঠনগুলিকে আর্থিক মদত জোগানো নিয়ে জেরা করতে চেয়েছিলেন তদন্তকারীরা। তাই এসেছিলাম। ওঁদের সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ইয়াসিন মালিকের সঙ্গে চিকিৎসক ও রোগীর সম্পর্ক আমার। ১৯৯৫-’৯৬ নাগাদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ওঁকে চিকিৎসার জন্য এমসে উড়িয়ে আনে। তখন থেকেই ওঁর সঙ্গে সম্পর্ক।’’

তবে এ ভাবে তাঁকে ডেকে পাঠানোয় অন্য ইঙ্গিত দেখছেন উপেন্দ্র কলের ঘনিষ্ঠরা। কাশ্মীরি পণ্ডিত হওয়া সত্ত্বেও শুরু থেকেই জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে প্রকাশ্যে মোদী সরকারের একাধিক নীতির সমালোচনা করে এসেছেন তিনি। উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা বিলোপের বিরুদ্ধেও সম্প্রতি সরব হন তিনি। তাই খামোকা তাঁকে হেনস্থার চেষ্টা করে হয় বলে অভিযোগ তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন