মনোহরলাল খট্টর।
সকালে থানায় গিয়ে অভিযোগ করে এসেছিলেন। বিকেলের মধ্যে তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই রবার্ট বঢরা আর হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভুপেন্দ্র সিংহ হুডার বিরুদ্ধে এফআইআর হয়ে গেল! পুলিশের এমন তৎপরতায় নিজেই চমকে গিয়েছেন অভিযোগকারী সুরেন্দ্র শর্মা!
নিজেকে ‘সমাজকর্মী’ বলেন সুরেন্দ্র। বিজেপির সঙ্গে কোনও যোগ নেই বলেও দাবি করেন। কিন্তু গত কালের এই ঘটনার পরে রাত পোহাতেই তাঁকে সাধুবাদ জানাতে সামনে আসেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। বলেন, ‘‘এক জন সাহস করে অভিযোগ করেছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। আইন আইনের পথে চলবে।’’ একই কথা দিল্লির বিজেপি নেতাদেরও।
যে কংগ্রেস অনেক দিন ধরে সনিয়া গাঁধীর জামাই রবার্টকে একজন ‘প্রাইভেট সিটিজ়েন’ বলে দূরত্ব বজায় রাখত, তারাই আজ রীতিমতো বিবৃতি জারি করে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বিবৃতি দেন, ‘‘রাফাল থেকে নোটবন্দি, পেট্রল-ডিজেলে ১২ লক্ষ কোটি টাকার লুট, বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার ব্যর্থতা ঢাকতে নরেন্দ্র মোদী সরকার এখন দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে।’’
রবার্ট বলেছেন, ‘‘ভোটের মরসুম। অন্য বিষয় থেকে দৃষ্টি ঘোরানো হচ্ছে। নতুন কী? আমি কি দেশ ছেড়ে পালিয়েছি? প্রশ্ন থাকলে জিজ্ঞাসা করুক।’’ আর হুডার মন্তব্য, ‘‘হারের মুখে বিজেপি এখন অযৌক্তিক মামলা তুলছে। ধিংড়া কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ না করেই এফআইআর হয়েছে।’’ রবার্টের বিরুদ্ধে এক সময় সক্রিয় হওয়া আইএএস অফিসার অশোক খেমকা অবশ্য বলেন, ‘‘তিন বছর আগেই পদক্ষেপ করা যেত। ধিংড়া কমিটির গঠন অর্থ আর সময়ের অপচয়। দুর্নীতিকে আড়াল করাও দুর্নীতি।’’
কংগ্রেস বলছে, যাবতীয় স্ট্যাম্প ডিউটি দিয়েই ২০০৮ সালে বাণিজ্যিক এলাকায় সাড়ে তিন একরের জমি কিনেছিল রবার্ট বঢরার সংস্থা। তার পর লাইসেন্সও পায়। পাঁচ বছর পর সেটির ন্যায্য কর মিটিয়ে ডিএলএফ সংস্থাকে বিক্রি করে। গোটা লেনদেনে দুর্নীতি কোথায়? এখনও হরিয়ানার বিজেপি সরকার লাইসেন্স বাতিল করেনি। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘গোটা রাজ্যে বিজেপি-সহ সব সরকার এমন ৩৩ হাজার একর জমিকে লাইসেন্স দিয়েছে। কয়েক হাজার একর মুখ্যমন্ত্রী খট্টরও দিয়েছেন। শুধু রবার্টের সাড়ে তিন একরেই দুর্নীতি খুঁজে পাচ্ছে বিজেপি?’’