সিবিআই ‘প্রধান’ অলোক বর্মা-কাণ্ডে জুড়লেন অমিত-পুত্র

জয় শাহের দুর্নীতির তদন্তে কেউটে বেরিয়ে আসতে পারে আশঙ্কা করেই কি বর্মাকে নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে ক্ষমতা দেওয়া হল শাসক শিবিরের ঘনিষ্ঠ অফিসারের হাতে?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৪২
Share:

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের ছেলে জয় শাহের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ফাইল খুলেছিলেন অলোক বর্মা। দাবি সিবিআইয়ের একটি সূত্রের। —ফাইল চিত্র।

ছিল রাফাল। তার সঙ্গে যোগ হল জয় শাহ।

Advertisement

২৩ অক্টোবর মাঝরাতের অপারেশনে সিবিআই প্রধান অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর পরে কংগ্রেস অভিযোগ করেছিল, রাফাল দুর্নীতি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করাতেই তাঁকে সরতে হল। এই অভিযোগ নিয়ে গত কাল পথেও নেমেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী।

সিবিআইয়ের একটি সূত্র আবার আজ দাবি করেছে, ছুটিতে পাঠানোর দিন চারেক আগে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের ছেলে জয় শাহের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে ফাইল খুলেছিলেন বর্মা। সেই দাবি লুফে নিয়ে কংগ্রেসের প্রশ্ন, বর্মাকে তড়িঘড়ি ছুটিতে পাঠানোর এটাও কি কারণ? জয় শাহের দুর্নীতির তদন্তে কেউটে বেরিয়ে আসতে পারে আশঙ্কা করেই কি বর্মাকে নিষ্ক্রিয় করে দিয়ে ক্ষমতা দেওয়া হল শাসক শিবিরের ঘনিষ্ঠ অফিসারের হাতে?

Advertisement

জয় শাহের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০১৪-’১৫ সালে তাঁর সংস্থা শাহ টেম্পল এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের লাভের পরিমাণ ছিল ১৮,৭২৮ টাকা। পরের বছর তা বেড়ে হয় ৮০.৫ কোটি। বিষয়টি গড়ায় আদালতে। মানহানির মামলাও হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে কর্নাটকে এক জনসভায় রাহুল বলেন, এই দুর্নীতির পিছনে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচ্ছন্ন মদত আছে।

আরও পড়ুন: সিভিসি-প্রধানের বিদেশযাত্রা কেন বাতিল? প্রশ্ন তুলল কংগ্রেস

বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে অমিত শাহ অবশ্য দাবি করেন, তাঁর ছেলে নিয়ম মেনেই ব্যবসা করেন। সরকারের সঙ্গে তাঁর কোনও ব্যবসায়িক লেনদেন নেই। বা সরকারের কাছ থেকে তিনি এক ছটাক জমিও নেননি। তার পরেও অবশ্য জয় শাহকে লক্ষ্য করে বিরোধীদের আক্রমণ স্তিমিত হয়নি।

এখন প্রশ্ন হল, রাফাল হোক বা জয় শাহ, সিবিআইয়ের পক্ষে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কি কোনও তদন্ত শুরু করা সম্ভব? কেননা সাধারণ ভাবে সংশ্লিষ্ট সরকারের অনুমতিক্রমে অথবা আদালতের নির্দেশেই তদন্তের কাজ শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআইয়ের একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, এর বাইরে নিজের থেকে তদন্ত শুরুর এক্তিয়ার সংস্থার রয়েছে।

কংগ্রেসের বক্তব্য, জয়ের দুর্নীতি সম্পর্কে ১০ জন অভিযোগকারীর একটি আবেদন সিবিআই প্রধানের কাছে এসেছিল। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগের সত্যতা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছিলেন বর্মা। তাতেই প্রমাদ গোনে বিজেপি। তদন্ত যাতে শুরু না হয়, তা নিশ্চিত করতে বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় শাসক শিবির। কংগ্রেস নেতা অভিষেক সিঙ্ঘভির দাবি, ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে রাফাল, ব্যপমের মতো অমিত শাহের ছেলের ফাইল নিয়েও নড়াচড়া শুরু হয়েছিল।’’

সিবিআই প্রধান অমিত-পুত্রের ফাইল খুলতে চাইছিলেন, এই দাবির সত্যতা স্বীকার না-করলেও, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘সারবত্তাহীন অভিযোগ। এমন অভিযোগ আগেও উঠেছে।’’ আর বিজেপির মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস যে ভাবে বর্মার হয়ে কথা বলছে, সেটা দেখে মনে হচ্ছে বর্মাকে তারা দলের অ্যাকটিভিস্ট বানাতে চাইছে। সিবিআই প্রধানকে এ ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করাটা ঠিক নয়।’’

একাধিক বার ফোন করেও বর্মার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন