পদমর্যাদার বিচারে সিবিআইয়ের দু’নম্বর রাকেশ আস্থানা। —ফাইল চিত্র।
ঘুষকাণ্ডে সামান্য হলেও স্বস্তি মিলল সিবিআইয়ের স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানার। আগামী সোমবার পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না। সে দিন আস্থানার সমস্ত অভিযোগের জবাব দেবেন সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মা। তার পরেই আস্থানার বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে। মঙ্গলবার এমনটাই জানিয়ে দিল দিল্লি হাইকোর্ট।
এ দিন সকালে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আস্থানা। ঘুষকাণ্ডে এফআইআরের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতি রাজেন্দ্র মেননের এজলাসে নিজের আবেদন দাখিল করেন তিনি। ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে জোরজবরদস্তি করে যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করা হয়, আদালতের কাছে সেই অনুরোধ করেছিলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি সেই আবেদন একটি বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সেখানেই আস্থানার আবেদনের ভিত্তিতে ওই নির্দেশ দেওয়া হয়। আপাতত গ্রেফতারি এড়ালেও আস্থানাকে তাঁর মোবাইল এবং ল্যাপটপ সযত্নে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে আদালতে সামান্য স্বস্তি মিললেও আস্থানার নিজের সংস্থায় তাঁর সমস্ত ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে।
আস্থানার পাশাপাশি সিবিআইয়ের আর এক আধিকারিক ডিএসপি দেবেন্দ্র কুমারও আদালতে আবেদন করেন।
আরও পড়ুন
আতসবাজিতে নিষেধাজ্ঞা নয়, বলল সুপ্রিম কোর্ট, বাজি পোড়ানো যাবে রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত
মইন কুরেশি আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের দ্বিতীয় শীর্ষ প্রধান আস্থানার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই মামলায় সতীশ সানা নামে এক ব্যবসায়ীর বয়ানের ভিত্তিতে গত ১৫ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআরও দায়ের করে সিবিআই। তাতে যথেষ্ঠ বিপাকে পড়েন তিনি। ওই এফআইআর ছাড়াও গ্রেফতার করা হয় আস্থানা-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ডিএসপি দেবেন্দ্র কুমারকে।
আরও পড়ুন
ক্ষুব্ধ মোদী, অলোক নাছোড়ই
গোটা ঘটনায় প্রকাশ্যে চলে আসে সিবিআই ডিরেক্টর অলোক বর্মার সঙ্গে তাঁর ডেপুটি আস্থানার দ্বৈরথ। আস্থানা শিবির দাবি করে, ওই ঘুষ আসলে দেওয়া হয়েছিল অলোক বর্মাকেই। আস্থানাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন অলোকই। যদিও আস্থানার অভিযোগকে ‘ভুয়ো এবং বিদ্বেষপূর্ণ’ বলেই আখ্যা দিয়েছে সিবিআই।
আরও পড়ুন
পেটিএম মালিককে ব্ল্যাকমেল, গ্রেফতার এই প্রাক্তন সেক্রেটারি
বিষয়টিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করে আক্রমণ শানাতে শুরু করে বিরোধীরা। আস্থানাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘নয়নমণি’ বলে উল্লেখ করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে।একই মত প্রকাশ করেন আম আদমি পার্টির প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও। রাহুলের মতে, এতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটির ভাবমূর্তি তলানিতে ঠেকছে। এই পরেই বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হয় প্রধানমন্ত্রী দফতর। গত কাল অলোক বর্মা এবং রাকেশ আস্থানাকে নিয়ে বৈঠকও করেন প্রধানমন্ত্রী।
তবে ওই বৈঠকের পরেও শান্ত হয়নি সিবিআইয়ের অন্দর। এ দিন সকাল থেকেই বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট বার হয়,আস্থানাকে সাসপেন্ড করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন অলোক বর্মা।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)