প্রশ্ন ফাঁস রুখতে প্রশ্ন বিতরণে নতুন প্রযুক্তি এনে বজ্র আঁটুনি দিতে চেয়েছিল সিবিএসই। কিন্তু বিনা প্রস্তুতিতে শেষ মুহূর্তের প্রয়োগে কার্যত লেজেগোবরে দশা হল কেন্দ্রীয় বোর্ডের। শেষে ফিরতে হল পুরনো পদ্ধতিতে। যার খেসারত দিতে হল পরীক্ষার্থীদের। দিল্লির অধিকাংশ কেন্দ্রে গড়ে এক ঘণ্টা পর শুরু হয় পরীক্ষা।
গত বুধবার দশম শ্রেণির অঙ্ক প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার পর আজই ছিল প্রথম পরীক্ষা—দশম শ্রেণির ভাষা পরীক্ষা (সংস্কৃত, উর্দু, ফরাসি) আর দ্বাদশ শ্রেণির হিন্দি পরীক্ষা।
দু’দিন আগে জানা গিয়েছিল, প্রশ্ন ফাঁসের পিছনে রয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ। তারাই সময়ের আগে প্রশ্নপত্রের বান্ডিল খুলে তার ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপ করে দেন। এই সমস্যা ঠেকাতে নতুন ব্যবস্থা নেয় সিবিএসই। এ যাবৎ কেন্দ্রীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে ছাপানো প্রশ্ন চলে যেত পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছে থাকা ব্যাঙ্কে। সেখান থেকে পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রশ্ন সংগ্রহ করে নিতেন স্কুলের প্রতিনিধিরা। কিন্তু শনিবার দিল্লিতে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির যথাক্রমে ৭৪৪টি ও ৭৩৩টি কেন্দ্রের কাছে নির্দেশ আসে যে, ওই ব্যবস্থা আপাতত বাতিল করা হচ্ছে। পরিবর্তে প্রশ্নপত্র এনক্রিপটেড বা সাংকেতিক ভাষায় সিবিএসই ওয়েবসাইটে থাকবে। পরীক্ষা শুরুর ঠিক ১৫ মিনিট আগে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে তা ডাউনলোড করে প্রিন্ট আউট বার করে নেবে। এজন্য প্রতিটি স্কুলে সিসি ক্যামেরা লাগানো সুরক্ষিত ঘর, হাই স্পিড ইন্টারনেট-সহ একাধিক কম্পিউটার, প্রিন্টার, যথেষ্ট কাগজ, জেনারেটর রাখতে বলা হয়। যাঁরা বিষয়টির তদারকি করবেন, স্কুলের সেই কম্পিউটার শিক্ষক ও কর্মীদের সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে স্কুলে চলে আসতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: অঙ্ক পরীক্ষা কবে, জানতে চায় হাইকোর্ট
এক দিনের মধ্যে পরিকাঠামোগত এই পরিবর্তন করতে সমস্যায় পড়ে বহু কেন্দ্রই। উপরন্তু সকাল থেকেই একাধিক কেন্দ্র থেকে অভিযোগ আসতে শুরু করে, সাংকেতিক কোড খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে দেখে কেঁচে গণ্ডুষ করতে হয় সিবিএসইকে। ঠিক হয়, পুরনো পদ্ধতি মেনে ছাপা প্রশ্নপত্র ব্যাঙ্কে পাঠিয়ে দেবে কেন্দ্রীয় বোর্ড। সেখান থেকে সংগ্রহ করে নেবে স্কুলগুলি। ফলে প্রশ্নপত্র হাতে আসতে প্রায় এক ঘণ্টা কেটে যায়। পরীক্ষার্থীদের পরে বাড়তি এক ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় ঠিকই। তবে প্রশ্ন ফাঁস রুখতে গিয়ে যে ফের মুখ পুড়ল সিবিএসই-র, তা নিয়ে সন্দেহ নেই কেন্দ্রেরও।