Farmers Protest

কৃষকেরা পিছু হটবেন ভাবাটাই ভুল: রাহুল

কৃষি আইনের বিরোধিতা সংক্রান্ত যে স্মারকলিপিটি বিরোধীদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে, তাতে অগণতান্ত্রিক ভাবে সংসদে কৃষিবিল পাশ করানোর অভিযোগটি রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:২৬
Share:

ছবি পিটিআই।

রাষ্ট্রপতির কাছে ও তাঁকে স্মারকলিপি দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সামনেও তিন কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সরব হলেন রাহুল গাঁধী। হুঁশিয়ার করলেন মোদী সরকারকে। বললেন, “কৃষকরাই ভারত। তাদের কেউ পিছু হটাতে পারবে না। সরকার যেন এই বিভ্রান্তিতে না-থাকে যে কৃষকরা সমঝোতা করে নেবেন। কারণ তাঁরা বুঝেছেন, এক বার যদি এই আইন মেনে নেওয়া হয়, তা হলে তাঁদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।”

Advertisement

এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার, সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের ডি রাজা এবং ডিএমকের ইলানগোভানকে পাশে নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুলের বক্তব্য, “আমি কৃষকদের বলেছি, যদি আজ আপনারা দৃঢ় হয়ে না-থাকেন, তা হলে আর কখনও সুযোগ পাবেন না। আমরা সবাই আপনাদের সঙ্গে রয়েছি। আপনারাই হিন্দুস্থান।”

কৃষি আইনের বিরোধিতা সংক্রান্ত যে স্মারকলিপিটি বিরোধীদের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে, তাতে অগণতান্ত্রিক ভাবে সংসদে কৃষিবিল পাশ করানোর অভিযোগটি রয়েছে। বলা হয়েছে, এই আইন দেশের খাদ্য সুরক্ষাকে বিঘ্নিত করবে, দেশের কৃষি ব্যবস্থা ও কৃষকদের ধ্বংস করবে, ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বলে আর কিছু থাকবে না এবং এই আইনের ফলে কৃষি ব্যবস্থাকে কার্যত কর্পোরেটদের হাতে বন্ধক হিসেবে তুলে দেওয়া হবে। রাহুলের পাশে সরব হন এনসিপির প্রবীণ নেতা পওয়ারও। তাঁর কথায়, “কৃষকরা বুঝতে পেরেছেন যে আইনগুলি আনা হয়েছে, তাতে তাঁদের স্বার্থ রক্ষিত হবে না। তৈরি হওয়া সঙ্কট মোচন করাটা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।” পওয়ারের কথায়, “বিরোধী দলগুলি চেয়েছিল, কৃষি সংক্রান্ত বিলগুলিকে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে। তা হলে বিলগুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যেত। কিন্তু সরকার তা শোনেনি। তাড়াহুড়ো করে বিল পাশ করিয়েছে। এর ফলে কৃষকদের মধ্যে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।” এই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলির যে সরাসরি কোনও সংযোগ নেই, সে কথাও মনে করিয়ে দেন পওয়ার।

Advertisement

বাম শিবিরের বক্তব্য, সংসদে কৃষি বিলগুলি নিয়ে ঠিক মতো আলোচনা হলে আজ এই সমস্যার সামনে পড়তে হত না। সীতারাম ইয়েচুরির মতে, “অগণতান্ত্রিক ভাবে কারও সঙ্গে ঠিক মতো আলোচনা না-করে কৃষি বিল পাশ করিয়েছে সরকার। যে আন্দোলন চলছে, তা ঐতিহাসিক। এবং ক্রমশ তা আরও বাড়বে।” সিপিআই নেতা ডি রাজা বলেন, “কৃষকদের সঙ্গে যে অন্যায় হচ্ছে, তাতে কোনও রাজনৈতিক দল মুখ বুজে থাকতে পারে না।”

কৃষি বিল পাশ হওয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে সরব রয়েছেন রাহুল। পঞ্জাবে দাঁড়িয়ে তিনি তোপ দেগেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে। বলেছিলেন, “মোদী সরকার কিছু নির্দিষ্ট শিল্প সংস্থার হাতে দেশের কৃষিক্ষেত্রটি বেচে দিতে চান। আজও সে কথারই প্রতিধ্বনি করে কংগ্রেস নেতা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন এই বিল কৃষকদের হিতের জন্যই আনা হচ্ছে। তা-ই যদি হবে তা হলে আজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কেন আন্দোলন করছেন তাঁরা? কেন কৃষকদের এত ক্ষোভ? আসলে এই আইনের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীর বন্ধুদের হাতে কৃষিক্ষেত্রটাকে তুলে দেওয়া।“ এই ঠান্ডার মধ্যে কৃষকরা যে অহিংসভাবে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন, সে কথা উল্লেখ করে রাহুল বলেন, “সরকার যেন না ভাবে যে, কৃষকরা ভয়ে পিছিয়ে যাবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন