BJP

কর্নাটক থেকে শিক্ষা, চার রাজ্যে ভোটের আগে রাজ্য নেতাদের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে পদ্ম শিবিরে

সামনেই রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও তেলঙ্গনায় বিধানসভা নির্বাচন। তেলঙ্গানাকে বাদ দিলে বাকি রাজ্যগুলিতে জয়ে জন্য পুরনোদের উপরে ভরসা রাখতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

Advertisement

অনমিত্র সেনগুপ্ত

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২৩ ০৮:১২
Share:

রাজ্যগুলিতে জয়ে জন্য পুরনোদের উপরে ভরসা রাখতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

ভোটযুদ্ধে এ বার রাজ্য নেতৃত্বের গুরুত্ব বাড়তে চলেছে বিজেপিতে। সামনেই রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় ও তেলঙ্গনায় বিধানসভা নির্বাচন। তেলঙ্গানাকে বাদ দিলে বাকি রাজ্যগুলিতে জয়ে জন্য পুরনোদের উপরে ভরসা রাখতে চাইছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

Advertisement

কর্নাটকের ফলেই স্পষ্ট বি এস ইয়েদুরাপ্পার মতো বর্ষীয়ান, পোড়খাওয়া নেতাকে একঘরে করার ফল ভুগতে হয়েছে বিজেপিকে। ভোটে তাঁর নিষ্ক্রিয়তা এবং ক্ষুব্ধ লিঙ্গায়েত গোষ্ঠী বিজেপির পিছন থেকে সরে যাওয়া— ওই দক্ষিণী রাজ্যে দলের পরাজয়ের অন্যতম। দলের প্রাথমিক রিপোর্টে এমনটাই উল্লেখ। ছ’মাসে আগে হিমাচলে দলের হারের পিছনে স্থানীয় নেতৃত্বকে অগ্রাহ্যে অভিযোগ উঠেছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।

চার রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের উপরে পরোক্ষে লোকসভা ভোটের ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করছে। মনে করা হচ্ছে, কংগ্রেস বা বিজেপির মধ্যে যে জাতীয় দল ওই রাজ্যগুলিতে ভাল ফল করবে, তারা লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে মানসিক ভাবে এগিয়ে থাকবে। এ যাত্রায় নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখা ও বাকি দুই রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের খবর, মধ্যপ্রদেশে চার বারের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের উপরেই আস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। বিজেপি কর্নাটক বা হিমাচলে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ করে লড়েছিল। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়। তাই শিবরাজকেই রাজ্যে দলের ‘মুখ’ করার সিদ্ধান্ত একপ্রকার চূড়ান্ত। তবে শিবরাজ-বিরোধী শিবিরের— নরেন্দ্র সিংহ তোমর, বি ডি শর্মার মতো নেতাদের বিবাদ ভুলে কাজে নামার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে। মূলত তাঁরই জন্য চার বছর আগে কংগ্রেসের কমলনাথ সরকার ভেঙে গিয়েছিল। মধ্যপ্রদেশে সংগঠন তুলনায় শক্তিশালী হওয়ায় টিকিট বিলি, রণকৌশল নির্ধারণের মতো বিষয়ে সংগঠনের লোককে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি।

ছত্তীসগঢ়ে গত পাঁচ বছরে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ সিংহ বঘেল বিজেপিকে বড় মাপের আন্দোলনের সুযোগ দেননি। তাঁর ব্যক্তিত্বের কারণে সেখানে কংগ্রেসে গোষ্ঠীকোন্দলও কম। তাই ছত্তীসগঢ়ে ক্ষমতায় ফেরার লড়াই যে বেশি কঠিন, তা ঘরোয়া ভাবে মেনে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারা। সূত্রের মতে, ওই রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহের উপরেই ভরসা রাখছে বিজেপি। ভোটের কথা মাথায় রেখে তাঁকে কোমর বেঁধে নেমে পড়তেও বার্তা দেওয়া হয়েছে।

ছত্তীসগঢ়ে লড়াই কঠিন হলেও রাজস্থানে ক্ষমতায় ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী পদ্ম-নেতৃত্ব। সেখানে কংগ্রেসের অশোক গহলৌত ও সচিন পাইলটের বিবাদের সুযোগ কাজে লাগাতে চান তাঁরা। কিন্তু কংগ্রেসের মতো মরু-রাজ্যে বিজেপিও অন্তর্কলহে দীর্ণ। সব দিক বিচার করে সেখানে বসুন্ধরা রাজেকে সামনে রেখে এখন এগনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়াত, কিরোরি লাল মিনাদের দলের স্বার্থে বসুন্ধরার সঙ্গে চলার পরামর্শ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আপাতত পদ্মমুক্ত দক্ষিণে, তেলঙ্গনার উপরে জোর দিচ্ছে বিজেপি। ওই রাজ্যে দলের অন্দরে মনোমালিন্য কম। তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষেণ রেড্ডি ও রাজ্য সভাপতি বান্দি সঞ্জয়কে সামনে রেখেই ভোটে ঝাঁপাতে চায় দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন