ভারতীয় সেনা। —ফাইল ছবি।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে টানাপড়েনের আবহে ভারতীয় সেনার কাজের ধরনে বদল আনল কেন্দ্র। এত দিন সীমান্তে কোনও রকম সংঘাতের আবহে আলাদা ভাবেই কাজ করত ভারতীয় সেনার তিন বাহিনী— স্থল, নৌ এবং বিমান। এ বার থেকে তারা একসঙ্গে কাজ করবে একই কমান্ডারের নেতৃত্বে। বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানাল কেন্দ্রীয় সরকার। গত ২৭ মে থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
২০২৩ সালের বাদল অধিবেশনে এই নিয়ম সংক্রান্ত ‘ইন্টার-সার্ভিসেস অর্গনাইজ়েশন’ বিল পাশ হয়েছিল সংসদের দুই কক্ষে। এর পর ওই বছর অগস্ট মাসে রাষ্ট্রপতির সইয়ের পর তা আইনে পরিণত হয়। ভারতীয় সেনায় ওই আইন কার্যকর হয় গত বছর ১০ মে। এ বার জারি হল নিয়ম।
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, ‘‘ভারতীয় সেনার তিন বাহিনী যাতে যৌথ ভাবে দ্রুত কাজ করতে পারে, সেই লক্ষ্যেই নয়া নিয়ম।’’ সরকার জানিয়েছে, সীমান্তে তিন বাহিনী একসঙ্গে কাজ করলেও তারা যে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম মেনে চলে, তাতে কোনও বদল হবে না।
সরকারি সূত্রে খবর, এত দিন সীমান্তে জরুরি পরিস্থিতিতে তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত ধীর গতিতে হত। নতুন নিয়মে তেমনটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ, তিন বাহিনীই এক কমান্ডারের অধীনে কাজ করবে। ফলে এতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে। যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, নেতৃত্বে থাকা কমান্ডারই নেবেন। যৌথ অপারেশনেও কোনও দ্বন্দ্ব বা বিভ্রান্তির জায়গা থাকবে না।
জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডে বেশ কয়েকটি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারত। ভারতীয় সেনার সেই ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর সংঘাতে জড়ায় নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদ। ভারতের উপর পাল্টা হামলার চেষ্টা করে পাকিস্তান। ভারতীয় সেনা জানিয়েছে, তারা পাক সেনার ওই হামলা প্রতিহত করেছে। পাল্টা জবাবও দিয়েছে। দিন তিনেকের ওই সংঘর্ষের পর সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। এখন তা-ই বহাল রয়েছে। সেই আবহে ভারতীয় সেনায় নয়া নিয়মকে রণকৌশল হিসাবেই দেখছেন অনেকে।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের আবহে সবচেয়ে সক্রিয় ছিল ভারতীয় সেনার পশ্চিম এবং উত্তর কমান্ড। সরকারি সূত্রে খবর, শুরুতে ওই দুই কমান্ডেই নতুন নিয়ম কার্যকর করা হবে। বাকি সীমান্তগুলিতে চালু হবে পরে।