গোয়া-মণিপুরের ভোটের পরে মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগে রাজ্যপালদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজে লাগানোর অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। রাজ্যপালদের কাজকর্মের পদ্ধতি আরও সুনির্দিষ্ট ভাবে বেঁধে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা নিয়ে এ বার নরেন্দ্র মোদী সরকার রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা শুরু করল।
আজ আন্তঃরাজ্য পরিষদের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ রাজ্যই মত দিয়েছে, রাজ্যপালের রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করা উচিত। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক খতিয়ে দেখতে এম এম পুঞ্ছি কমিশন গঠন হয়েছিল। সেই কমিশনের রিপোর্টকে ভিত্তি করেই আজ আন্তঃরাজ্য পরিষদে রাজ্যপাল নিয়ে মতামত চান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। প্রায় ১২ বছর এই পরিষদের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকা হল। রাজনাথ, অরুণ জেটলির মতো কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, ত্রিপুরা, ছত্তীসগঢ়, অন্ধ্রপ্রদেশ, পঞ্জাব, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীরা বর্তমান স্থায়ী কমিটির সদস্য। উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরা, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রীরা বৈঠকে যোগ দেন। বাকি রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব করেন অন্য মন্ত্রীরা। অন্ধ্রের অর্থমন্ত্রী ওয়াই রামকৃষ্ণুডু বলেন, ‘‘অধিকাংশ রাজ্যই চায়, রাজ্যপালরা যেন রাজনীতিতে নাক না গলান।’’
পুঞ্ছি কমিশনের রিপোর্টকে ভিত্তি করে তৈরি আন্তঃরাজ্য পরিষদের নোট অনুযায়ী, রাজ্যপাল কাকে সরকার গড়তে অগ্রাধিকার দেবেন, তার নির্দিষ্ট নিয়ম থাকতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে অপসারণের আগে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য ৫ থেকে ৩০ দিন সময় দিতে হবে। বিহারের মতো রাজ্য অবশ্য আগে মত দিয়েছিল, রাজ্যপালের পদটি এখন অপ্রয়োজনীয়। গুজরাত-হরিয়ানার আবার মত, রাজ্যপাল নিয়োগের নিয়মকানুন ঠিকই রয়েছে। সূত্রের খবর, আজ রাজনাথও মত দিয়েছেন যে রাজ্যপাল নিয়োগের নিয়ম, ভূমিকা ও ক্ষমতা যেমন রয়েছে তাতে আর বদলের দরকার নেই। তাঁকে সমর্থন জানান জেটলিও।
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ নিয়ে বৈঠকে অধিকাংশ রাজ্য মত দিয়েছে, কেন্দ্রের দায়িত্ব রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু কোন রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হবে, তা কেন্দ্রের এক তরফা ঠিক করা উচিত নয়। এ বিষয়ে রাজ্যের মত থাকা উচিত। তাৎপর্যপূর্ণ হল, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহও যুক্তি দিয়েছেন, রাজ্য অনুরোধ করলে তবেই যেন কেন্দ্রীয় সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠায়। রাজনাথের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর এ বার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে আন্তঃরাজ্য পরিষদে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে।