ফাইল চিত্র।
কোনও আলোচনা নয়। বিতর্ক নয়। বিরোধীদের সমালোচনা, অর্থমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতাও নয়। হট্টগোলের মধ্যে আজ লোকসভায় পাশ হয়ে গেল নরেন্দ্র মোদী সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। বাজেট, অর্থ বিল তো বটেই, প্রতিটি মন্ত্রকের জন্য অর্থ বরাদ্দ বা অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল নিয়েও কোনও আলোচনা হল না।
এমন ঘটনাকে সরকারি পরিভাষায় ‘গিলোটিন’ বলে। এবং তা বেনজির নয়। প্রথম ইউপিএ-সরকারের শেষ বছরে আলোচনা ছাড়াই বাজেট পাশ হয়েছিল। তার পর দ্বিতীয় ইউপিএ-সরকারের শেষ বছরে, নানা দুর্নীতির প্রতিবাদে যখন সংসদ অচল করে রেখেছিল তৎকালীন বিরোধীরা, তখনও বিনা আলোচনায় বাজেট পাশ করানো হয়।
আজও সংসদ অচল রাখার অভিযোগই তুলেছে সরকার পক্ষ। তাদের বক্তব্য, বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে গত ৮ দিন ধরে কোনও কাজই হচ্ছে না। বিরোধীদের পাল্টা বক্তব্য, নীরব মোদীর কেলেঙ্কারি, কৃষকদের দুর্দশার মতো বিষয়ে আলোচনার দাবি সরকার মানতে রাজি নয় বলেই তাদের প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। তা ছাড়া, সংসদ অচল করে রেখেছে তেলুগু দেশমের মতো এনডিএ-র শরিক। আজ গিলোটিনের সময়ও তেলুগু দেশম-সহ অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানার দলগুলি লোকসভায় নেমে হট্টগোল করেছে। গোরক্ষপুর উপ-নির্বাচনে ভোটগণনার সময় সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে না দেওয়ায় প্রতিবাদে ওয়েলে নেমেছিল সমাজবাদী পার্টিও।
বস্তুত, মঙ্গলবার বিকেলেই হট্টগোলের মধ্যে বাজেট পাশ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল মোদী সরকার। কিন্তু বিরোধীরা সমান্তরাল অধিবেশনের হুমকি দেওয়ায় তা হয়ে ওঠেনি। আজ দুপুরে মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যে লোকসভায় ধ্বনি ভোটে গোটা বাজেট পাশ করিয়ে নেয় সরকার। সরকারের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিরোধীদের সামনেও কোনও উপায় ছিল না। প্রতিবাদে ওয়াক আউট করে প্রতিবাদে কংগ্রেস, তৃণমূল, এনসিপি, বিজু জনতা দল।
লোকসভায় অর্থ বিল ও অ্যাপ্রোপ্রিয়েশন বিল পাশ হয়ে যাওয়ায় আর চিন্তা রইল না জেটলির। কারণ, এই ‘মানি বিল’ দু’টি আটকানোর এক্তিয়ার রাজ্যসভার নেই। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে বিল দু’টি সেখানে আলোচনা না হলেও পাশ হয়েছে বলেই ধরে নেওয়া হবে।