সিন্ধু সীমান্তে সক্রিয় সইদ, উদ্বেগে কেন্দ্র

পাকিস্তানের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের কোনও প্রমাণ নেই। কিন্তু মুম্বই হামলার অন্যতম অভিযুক্ত হাফিজ সইদ সম্প্রতি যে ভাবে ভারত-পাক সীমান্তে সক্রিয় হয়েছেন তাতে নতুন করে বিপদের গন্ধ পাচ্ছে ভারত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, সিন্ধুপ্রদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সন্ত্রাসে মদত দিতে ও জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরগুলির কাজকর্ম দেখভাল করতেই ওই এলাকায় সফর করেছেন সইদ। ফলে, সিন্ধু থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রাজস্থান ও গুজরাতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ও অস্ত্রশস্ত্র ছড়ানোর চেষ্টা হতে পারে বলে আশঙ্কা গোয়েন্দাদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৪১
Share:

পাকিস্তানের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের কোনও প্রমাণ নেই। কিন্তু মুম্বই হামলার অন্যতম অভিযুক্ত হাফিজ সইদ সম্প্রতি যে ভাবে ভারত-পাক সীমান্তে সক্রিয় হয়েছেন তাতে নতুন করে বিপদের গন্ধ পাচ্ছে ভারত।

Advertisement

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দাবি, সিন্ধুপ্রদেশের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সন্ত্রাসে মদত দিতে ও জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরগুলির কাজকর্ম দেখভাল করতেই ওই এলাকায় সফর করেছেন সইদ। ফলে, সিন্ধু থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রাজস্থান ও গুজরাতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ ও অস্ত্রশস্ত্র ছড়ানোর চেষ্টা হতে পারে বলে আশঙ্কা গোয়েন্দাদের।

সম্প্রতি নয়াদিল্লির পাক হাইকমিশনার আব্দুল বাসিত দাবি করেছিলেন, হাফিজ সইদ পাকিস্তানের নাগরিক। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের কোনও প্রমাণ নেই। তাই তাঁকে গ্রেফতার করার প্রশ্ন নেই। পাকিস্তান প্রশাসন ওই দাবি করলেও ভারতীয় গোয়েন্দাবাহিনীর তথ্য বলছে, মুম্বই হামলার মূল ষড়যন্ত্রী পাকিস্তানে বসেই ভারতের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই উদ্দেশ্যেই গত এপ্রিল মাস থেকে ভারত-পাক সীমান্তে সক্রিয় রয়েছেন সইদ। একাধিক বার তাঁকে প্রকাশ্যে দেখাও গিয়েছে। লক্ষ্য হল, সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় অস্ত্র প্রশিক্ষণ শিবিরের কাজকর্ম খতিয়ে দেখা। এ ছাড়া ভারতে সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিতে নতুন যুবকদের ওই এলাকা থেকে নিয়োগ করা।

Advertisement

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে বাঁচতে ফের নাম বদলেছে হাফিজের সংগঠন। লস্কর-ই-তইবা আমেরিকার জঙ্গি তালিকায় স্থান পাওয়ার পরে জামাত-উদ-দাওয়া নামে কাজ চালাচ্ছিলেন সইদ ও তাঁর দলবল। সম্প্রতি মার্কিন জঙ্গি তালিকাভুক্ত হয়েছে জামাত-উদ-দাওয়াও। তার পরেই ফলাহে ইনসানিয়ত ফাউন্ডেশন (এফআইএফ) নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ব্যানারে সিন্ধু এলাকায় কাজ শুরু করেন সইদ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর বক্তব্য, “সইদকে পাকিস্তানের সিন্ধু সীমান্তের ইসলামকোট, মীরপুরখাস এবং খানপুর এলাকাতে দেখা গিয়েছে।” যার উল্টো দিকে রয়েছে ভারতের জৈসলমের সীমান্ত। ওই এলাকাগুলি ছাড়াও পাকিস্তানের মিঠি গ্রামে এ বছরের ২১ ও ২২ এপ্রিল থাকতে দেখা গিয়েছে সইদকে। এক অফিসারের বক্তব্য, “মিঠি গ্রাম থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। ফলে উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে।”

সূত্রের খবর, সীমান্তে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর জন্য গ্রামবাসীদের নগদ টাকা, বাসনপত্র, গবাদি পশুও বিতরণ করেছেন সইদ। এ ছাড়া একাধিক জায়গায় বৈঠক করে ভারতের বিরুদ্ধে জেহাদে নামার জন্য তরুণদের ডাক দিয়েছেন ওই জঙ্গি নেতা। সীমান্ত এলাকায় সইদ যে ভাবে নতুন করে সক্রিয় হয়েছেন তাতে ওই এলাকাগুলি থেকে ভারতে অস্ত্রশস্ত্র ও জঙ্গি অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছে কেন্দ্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, সে কারণে বিএসএফকে গোটা রাজস্থান ও গুজরাতের সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন