GST

জিএসটি: ঋণ নিতে ছাড়পত্র কুড়িটি রাজ্যকে

২০টি রাজ্যের অধিকাংশই বিজেপি বা এনডিএ-শাসিত। এ ছাড়া রয়েছে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা মতো রাজ্য়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৪:২৭
Share:

প্রতীকী চিত্র।

জিএসটি পরিষদে ঐকমত্য না-হলেও রাতারাতি ২০টি রাজ্যকে ৬৮,৮২৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিয়ে দিল কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক!

Advertisement

লকডাউনের ফলে জিএসটি থেকে আয় যতটা কম হয়েছে, সেই পরিমাণ টাকা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার যে প্রস্তাব নরেন্দ্র মোদী সরকার দিয়েছিল, এই রাজ্যগুলি তাতে সায় দিয়েছে। এই ২০টি রাজ্যের অধিকাংশই বিজেপি বা এনডিএ-শাসিত। এ ছাড়া রয়েছে মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরের, অন্ধ্রপ্রদেশের জগন্মোহন রেড্ডির এবং ওড়িশার নবীন পট্টনায়কের সরকার।

আইন অনুযায়ী, জিএসটি থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের কম আয় হলে কেন্দ্রের সেই ক্ষতি পূরণ করে দেওয়ার কথা। এই ক্ষতিপূরণের জন্য বিলাসবহুল দ্রব্যের উপরে সেস বসিয়ে বাড়তি টাকা তোলা হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, এ বছর কোভিড পরিস্থিতিতে সেস বাবদ যথেষ্ট আয় হয়নি। ফলে ক্ষতিপূরণ করার মতো টাকা তহবিলে নেই। এই অবস্থায় রাজ্যগুলি অভাব মেটাতে ধার করে নিক।

Advertisement

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ, কেরল এবং কংগ্রেস-শাসিত ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, পঞ্জাব-সহ ৯টি রাজ্য গত কাল জিএসটি পরিষদের বৈঠকে দাবি তোলে, কেন্দ্রই ধার করে ক্ষতিপূরণ মেটাক। এর আগে মহারাষ্ট্রও একই দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু মহারাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী গত কালের বৈঠকে হাজির ছিলেন না। আজ মহারাষ্ট্র নিজেই ধার করার পথে হাঁটায় বিরোধিতার রাস্তায় রইল ৯টি রাজ্য।

আজ এই ৯টি রাজ্যকে এড়িয়ে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক ২০টি রাজ্যকে ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিয়ে দিয়েছে। কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাক হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। আইজ্যাক বলেন, ‘‘আমরা বাকি রাজ্যগুলির সঙ্গে কথা বলব। সুপ্রিম কোর্টে গেলে, ৯টি রাজ্য একসঙ্গে যাবে।’’

কী যুক্তি দেওয়া হবে সুপ্রিম কোর্টে? আইজ্যাকের ব্যাখ্যা, ‘‘এই অর্থ-বছরে রাজ্যগুলির ২.৩ লক্ষ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। তার মধ্যে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে ১.১ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিতে বলছে। ২০১৭-য় জিএসটি চালুর পরে পাঁচ বছর, অর্থাৎ ২০২২ পর্যন্ত কেন্দ্রের জিএসটি ক্ষতিপূরণ মেটানোর কথা। এখন কেন্দ্র ক্ষতিপূরণ মেটানো স্থগিত রাখতে চাইছে। আর রাজ্যগুলিকে যে টাকা ধার করতে বলছে, ২০২২-এর পরেও সেস বজায় রেখে তা শোধ দিতে চাইছে। তা করতে হলে জিএসটি পরিষদে সিদ্ধান্ত নিতে হত। অ্যাটর্নি জেনারেলও সেই মত দিয়েছেন। কিন্তু ঐকমত্যের অভাবে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, কেন্দ্র আগেই লকডাউনের জন্য রাজ্যগুলিকে জিডিপি-র ৩ শতাংশের বদলে ৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিল। এর মধ্যে প্রশাসনিক সংস্কারের শর্ত পূরণ করলে ০.৫ শতাংশ ঋণের ছাড় মিলত। আজ রাজ্যগুলিকে যে অতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা ওই ০.৫ শতাংশের মধ্যে। তার জন্য প্রশাসনিক সংস্কারের শর্তে ছাড় দেওয়া হয়েছে। রাজ্যগুলি যাতে কম সুদে ঋণ নিতে পারে, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে বলে অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন