আধার কার্ড ইস্যু করেন যাঁরা, তাঁদের কাছে থাকা ভারতীয় নাগরিকদের ব্যাক্তিগত গোপনীয় তথ্যাদি কী ভাবে যে কেউ জেনে যেতে পারেন, সে সম্পর্কে খবর করার জন্য দৈনিক ‘দ্য ট্রিবিউন’-এর সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করলেন আধার কর্তৃপক্ষ ‘ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথরিটি অফ ইন্ডিয়া’ (ইউআইডিএআই)। আধার কর্তৃপক্ষের তরফে এক ডেপুটি ডিরেক্টর ওই এফআইআর করেছেন।
ওই সাংবাদিকের নাম রচনা খয়রা। খবর করার জন্য যাঁদের কাছ থেকে সেই সব তথ্য কিনেছিলেন ওই সাংবাদিক, সেই তিন জনেরও (অনিল কুমার, সুনীল কুমার ও রাজ) নাম রয়েছে এফআইআরে।
দিল্লি পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম ব্রাঞ্চ) অলোক কুমার ওই এফআইআর দায়ের হওয়ার কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গত ৪ জানুয়ারি দিল্লির অপরাধ দমন শাখায় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯, ৪২০, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারা, তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৬৬ নম্বর ধারা এবং আধার আইনের ৩৬/৩৭ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ওই সাংবাদিকের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আধার কার্ড ইস্যুর জন্য ইউআইডিএআই কর্তৃপক্ষের কাছে জমা রাখা কয়েক জন নাগরিকের টেলিফোন নম্বর ও ঠিকানা সহ বহু ব্যাক্তিগত গোপনীয় তথ্যাদি তিনি ওই তিন জনের কাছ থেকে কিনেছিলেন মাত্র ৫০০ টাকায়। কী ভাবে সেই সব ব্যাক্তিগত গোপনীয় তথ্যে উঁকি মারা যায়, ওই সাংবাদিককে তার উপায়ও তিন জন বাতলে দিয়েছিলেন বলে ‘দ্য ট্রিবিউন’-এর রিপোর্টের দাবি।
আরও পড়ুন- চিনও চাইছে সন্ত্রাসমুক্ত হোক পাকিস্তান: আমেরিকা
আরও পড়ুন- লালু জেলে যাওয়ায় নীতীশকে ধন্যবাদ দিলেন তেজস্বী
আধার কার্ড ইস্যু করার মাধ্যমে এই মুহূর্তে ইউআইডিএআই কর্তৃপক্ষের কাছে অন্তত ১ কোটি ১৯ লক্ষ ভারতীয় নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্যাদি জমা রয়েছে।
আইনের পথেই এই মামলার মোকাবিলা করবেন বলে জানিয়ে ট্রিবিউন পত্রিকার এডিটর-ইন-চিফ হরিশ খারে-র দাবি, বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখেই তাঁরা এমন খবর করেছেন। এডিটর্স গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার তরফে ওই এফআইআরের তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। এডিটর্স গিল্ড বলেছে, ‘‘এটা সাংবাদিককে শাসানো ছাড়া আর কিছু নয়। এটা অন্যায়, অনৈতিক ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপরে আঘাত।’’ কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘বার্তাবাহককে গুলি কর! বার্তাকে উপেক্ষা কর! এটাই হল বিজেপি সরকারের সংস্কৃতি ও চরিত্র!’’ সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির কথায়, ‘‘নিরাপত্তায় ফস্কা গেরো নিয়ে লেখাও এখন অপরাধ হয়ে গেল!’’