দৈব পদ্ধতিতে চাষের পরামর্শ গোয়া সরকারের। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
দৈব পদ্ধতিতে চাষ শিখে নিতে হবে। তবেই বাড়বে ফসলের উৎপাদন। পড়শি মহারাষ্ট্র সরকার যখন কৃষকদের দাবিদাওয়া মেনে নিয়েছে, ঠিক তখনই রাজ্যের কৃষকদের এমন আজব নিদান দিল গোয়া সরকার।
গোয়ার কৃষি দফতরের এক আধিকারিক শুক্রবার বলেন, ‘‘কৃষকদের দৈব পদ্ধতিতে চাষ শিখে নিতে বলা হয়েছে। যার আওতায় টানা ২০ দিন ধরে দিনে ২০ মিনিট করে চাষের জমিতে বৈদিক মন্ত্র জপতে হবে তাঁদের। সন্তুষ্ট করতে হবে দেবদেবীদের। তাতে ফসলের ফসলের উত্কর্ষ এবং উত্পাদন দুই-ই বাড়বে।’’
এ ব্যাপারে ‘শিব যোগ ফাউন্ডেশন’ এবং ‘ব্রহ্মকুমারী’ নামের দুই সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে রাজ্য সরকারের। রাজ্যের কৃষি মন্ত্রী বিজয় সরদেশাই এবং কৃষি বিভাগের ডিরেক্টর নেলসন ফিগুয়েরদো সম্প্রতি হরিয়ানার গুরুগ্রাম থেকে ঘুরেও এসেছেন। দৈব চাষে অভিজ্ঞ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা গুরু শিবানন্দের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁদের। দৈব পদ্ধতিতে চাষ করে কৃষকরা কীভাবে লাভবান হতে পারেন, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে তাঁদের মধ্যে। সংবাদমাধ্যমকে ফিগুয়েরদো বলেন, ‘‘শিব যোগ সংগঠনের তরফে দৈব পদ্ধতির গুরুত্ব বোঝানো হচ্ছে কৃষকদের। দৈব পদ্ধতিতে মন্ত্র জপে গোটা ব্রহ্মাণ্ডের শক্তি জমিতে টেনে আনা যায়। তাতে ফসলের উত্কর্ষ এবং উত্পাদন দুই-ই বাড়ে। আবার রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে দূষণের চিন্তাও দূর হয়। খরচও বাঁচে। কৃষিক্ষেত্রে জৈব বিপ্লব ঘটাতে চলেছে ভারত। তাতে গোটা দুনিয়া তোলপাড় হয়ে যাবে।’’
আরও পড়ুন: রাম-চাপে মোদী-যোগী! অযোধ্যা কাঁপাচ্ছে শিবসেনা-ভিএইচপি, উত্তেজনা চরমে
ব্রহ্মকুমারী সংগঠনের আঞ্চলিক শাখার স্থায়ী যৌগিক খামার প্রকল্পেও আগ্রহ রয়েছে গোয়া সরকারের। ফিগুয়েরদো জানান, ‘‘ওই সংগঠনের দাবি দেশের হাজারের বেশি কৃষক জৈব পদ্ধতিতে চাষের সঙ্গে নিয়ম করে ধ্যানও করছেন। তাতে অভূতপূর্ব সাফল্য মিলেছে।’’ তবে ফিগুয়েরদো একাই নন। বছরের শুরুতে রাজ্যের কৃষকদের জমিতে বৈদিক মন্ত্র জপ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন কৃষি মন্ত্রী বিজয় সরদেশাইও।
আরও পড়ুন: ১২ ফুট গভীর খালে পড়ল বাস, কর্নাটকে পাঁচ শিশু-সহ মৃত অন্তত ২৫
কিন্তু তাঁদের এমন পরামর্শ নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্যঙ্গ বিদ্রূপ শুরু হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘শুধু বৈদিক মন্ত্র জপ করলেই হবে, না তার সঙ্গে ভারত মাতা কি জয় বলতে হবে? তাতে নিশ্চয়ই সোনায় সোহাগা হবে!’’ নেটিজেনদের অনেকে আবার গোয়া সরকারকে সরাসরি মূর্খ বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের মতে, কতটা মূর্খ হলে এমন পরামর্শ দেয় কেউ! মন্ত্র জপলেই যদি ভাল ফসল হয়, তাহলে আর চিন্তা কী? ভোটে জিততে নিশ্চয়ই আর অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।