Fraud

Fraud: অমিতের জেলে বসে অমিতের নামে ফোন! ২০০ কোটি টাকার অমিত-জালিয়াতি

কখনও প্রধানমন্ত্রীর দফতর, কখনও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আবার কখনও আইন মন্ত্রক থেকে ফোন করছে বলে বিভিন্ন মন্ত্রীদের নাম নিয়ে কথা বলত চন্দ্রশেখর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:৩৯
Share:

শাহের নামে ফোন করে জালিয়াতি। ফাইল চিত্র।

তিহাড় জেলে বসে স্রেফ ফোনে কথা বলে এক মহিলাকে প্রতারণা করে ২০০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল সুকেশ চন্দ্রশেখর নামে এক তোলাবাজের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, একটি নামজাদা ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রাক্তন মালিক শিবিন্দর সিংহের স্ত্রীর থেকে তাঁর স্বামীর জামিন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই টাকা তোলে চন্দ্রশেখর। প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৯ সাল থেকে জেলে রয়েছেন শিবিন্দর ও তাঁর ভাই মালবিন্দর।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছেন, কখনও প্রধানমন্ত্রীর দফতর, কখনও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আবার কখনও আইন মন্ত্রক থেকে ফোন করছে বলে বিভিন্ন মন্ত্রীদের নাম নিয়ে কথা বলত চন্দ্রশেখর। শিবিন্দর সিংহের স্ত্রী অদিতি জানিয়েছেন, গত ১১ মাস ধরে ১০টি কিস্তিতে চন্দ্রশেখরকে ২০০ কোটি টাকা দিয়েছেন তিনি। তাঁকে বলা হয়েছিল, ওই টাকা নেওয়া হচ্ছে বিজেপির দলীয় তহবিলে দেওয়ার জন্য। অমিত শাহ, রবিশঙ্কর প্রসাদের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা তাঁর পাশে রয়েছেন।

পুলিশকে অদিতি জানিয়েছেন, ১১ মাস আগে প্রথমে এক মহিলা তাঁকে ফোন করে বলেন, আইনসচিব অনুপ কুমার তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। এর পরে এক ব্যক্তি নিজেকে অনুপ কুমার পরিচয় দিয়ে বলেন, কোভিড পরিস্থিতির জন্য ‘উপর মহলের নির্দেশে’ তাঁর স্বামী শিবিন্দরের জামিন পেতে সাহায্য করবেন তিনি। ক’দিন বাদে ফের ওই ব্যক্তি ফোন করে জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অদিতির সঙ্গে কথা বলতে চান। তিনি স্পিকারে রয়েছেন। এর কিছু দিন না যেতেই আবার ফোন করে ‘অনুপ কুমার’। অদিতি সিংহ জানিয়েছেন, ফোনের ট্রু-কলার অ্যাপে দেখা যায় ফোন এসেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের উপদেষ্টা পি কে মিশ্রর কাছ থেকে। এই রকম বেশ কয়েক বার কেন্দ্রের উপমহলের কর্তাদের নাম করে ফোন আসার পরে ‘অনুপ কুমার’ বিজেপির তহবিলের জন্য ২০ কোটি টাকা চায়। এবং গোয়েন্দা দফতরের নজর রয়েছে বলে দাবি করে বিষয়টি নিয়ে বেশি হইচই না করার পরামর্শ দেয়। প্রথমে তারা বিদেশে টাকা পাঠিয়ে দিতে বলে। পরে রোহিত নামে এক যুবক ও এক মহিলা এসে হাতে-হাতে টাকা নিয়ে যায়। এ ভাবে খেপে খেপে ২০ কোটি টাকা দেওয়ার পরে আরও ৩০ কোটি টাকা চাওয়া হয় অদিতি সিংহের থেকে। অভিযোগকারিণীর কথায়, ‘‘ওরা ভয় দেখাত, হুমকি দিত। তাই টাকা, গয়না, গচ্ছিত সম্পত্তি মিলিয়ে ওদের ২০০ কোটি টাকা দিতে বাধ্য হই। আমার সন্তানরা বিদেশে থাকে। ওদের নাম করেও ভয় দেখাত।’’

Advertisement

অদিতি জানিয়েছেন, এক সময়ে তিনি খেয়াল করেন ফোনে যারা কথা বলছে, তাদের প্রত্যেকের কথায় দক্ষিণ ভারতীয় টান। তখনই টনক নড়ে তাঁর। দ্রুত পুলিশে বিষয়টি জানান এবং জালিয়াতি ফাঁস হয়। পুলিশ জানতে পেরেছে, অদিতির থেকে নেওয়া টাকায় চেন্নাইয়ে সমুদ্রের ধারে একটি বিলাসবহুল বাংলো কেনে চন্দ্রশেখর ও তার সঙ্গী অভেনেত্রী লিনা ম্যারি পল। এ ছাড়াও একাধিক বহুমূল্য গাড়ি, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের গড়ি, ব্যাগ, জুতো, পোশাক উদ্ধার হয়েছে। দিল্লি পুলিশ জানতে পেরেছে, সারা দেশে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ২৩টি প্রতারণার মামলা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন