দিল্লির দূষণ-নীতি নিয়ে প্রশ্ন

বাসে চড়তে আপত্তি নেই প্রধান বিচারপতির

দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের জোড়-বিজোড় নীতি মেনে গাড়ি ব্যবহারের দাওয়াইকে স্বাগত জানালেন প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর। রবিবার তিনি বলেন, প্রয়োজনে বাসে বা পায়ে হেঁটেও কর্মক্ষেত্রে যেতে রাজি তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা, নয়াদিল্লি

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের জোড়-বিজোড় নীতি মেনে গাড়ি ব্যবহারের দাওয়াইকে স্বাগত জানালেন প্রধান বিচারপতি টিএস ঠাকুর। রবিবার তিনি বলেন, প্রয়োজনে বাসে বা পায়ে হেঁটেও কর্মক্ষেত্রে যেতে রাজি তিনি।

Advertisement

গত শুক্রবার নম্বরপ্লেটের শেষ সংখ্যা অনুযায়ী সপ্তাহে বার গুণে গাড়ি নামানোর নির্দেশ দিয়েছেন কেজরীবাল। যার সমর্থন জানিয়ে রবিবার প্রধান বিচারপতি বলেন, শুধু তিনিই নন, সুপ্রিম কোর্টের বাকি.বিচারপতিদেরও এই নিয়ম মানতে আপত্তি নেই। তবে টিএস ঠাকুরের সায় মিললেও ইতিমধ্যেই এই নয়া নিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আম দিল্লিবাসীর একাংশ।

দিল্লি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, গাড়ির নম্বরপ্লেটের শেষে জোড় সংখ্যা থাকলে সপ্তাহে সোম, বুধ, শুক্রবার সেই গাড়ি রাস্তায় নামানো যাবে। সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে পথে নামবে বিজোড় সংখ্যার গাড়িগুলি। ১ জানুয়ারি থেকে ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে চালু হবে এই নয়া নিয়ম। আর এই প্রস্তাব নিয়েই চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে রাজধানীর নানা মহলে।

Advertisement

তার মধ্যে সব চেয়ে বেশি প্রশ্ন উঠছে পরিকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে। শনি-রবি বাদ দিয়ে সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে কর্মক্ষেত্রে যেতে গণপরিবহণই ভরসা হলে, সেখানে ভিড় হবে লাগামছাড়া। সে ক্ষেত্রে যত বাস-মেট্রো বা অটো রয়েছে দিল্লিতে, তা কি যথেষ্ট? হাসপাতালে যাওয়ার মতো জরুরি প্রয়োজনগুলিতেই বা কী ব্যবস্থা হবে। প্রতিবন্ধী, অসুস্থ বা বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা যাতায়াত করবেন কী ভাবে? সে রকম হলে তো একই পরিবারে জোড় এবং বিজোড় সংখ্যার দু’টি গাড়ি থাকা প্রয়োজন।

আর এক অংশের আবার প্রশ্ন, রাজধানীর রাস্তায় প্রতিদিন যে পরিমাণ গাড়ি নামে সেই অনুপাতে পুলিশ বাহিনী নেই। আর যদি কেউ আইন ভাঙে জরিমানা আরোপের প্রক্রিয়াই বা কী হবে। সরকারি স্তরে এই সব প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি এখনও। উল্টে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ সরকারি আমলা বলেছেন, ‘‘এমন একটা শহরে বসে আমরা এই পরিকল্পনা করেছি, যে শহরের বেশিরভাগ মানুষ ট্রাফিক আইন মানেন না।’’ এমনকী চাপের মুখে শনিবার খোদ কেজরীবালও জানান, আপাতত এই নিয়ম চালু হচ্ছে ঠিকই। তবে সমস্যা হলে ১৪-১৫ দিন পর থেকে আর কার্যকরী থাকবে না।

তবে সমালোচনার মুখেই আজ প্রধান বিচারপতির সমর্থনে পালে হাওয়া পেয়েছেন কেজরীবাল। টিএস ঠাকুরের মতে, দিল্লির বাতাস যে ভাবে দিনের পর দিন বিষাক্ত হয়ে উঠছে, তাতে গাড়ি ব্যবহারে লাগাম লাগানো প্রয়োজন। সুপ্রিম কোর্টের বাকি বিচারপতিরাও কি একই ভাবে ভাবছেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘নতুন এই নিয়মে সমস্যাটা কোথায়? বিচারপতিরা যদি এই নিয়ম মানেন তবে বাকি দিল্লিবাসীর কাছে সদর্থক বার্তা যাবে। তাঁরাই নিয়ম মানবেন’’ তাঁর বক্তব্য, এখন থেকে আদালতে যেতে প্রতিবেশী বিচারপতি একে সিকরির গাড়ি ব্যবহার করবেন তিনি।

টিএস ঠাকুরের মন্তব্যের পরেই কেজরীবাল টুইট করেছেন, ‘‘যে ভাবে প্রধান বিচারপতি জোড়-বিজোড় নীতিকে সমর্থন জানিয়েছেন তাতে দিল্লি সরকার নিশ্চিত তারা ঠিক পথে এগোচ্ছে। বিচারপতিদের দেখে বাকি দিল্লিবাসীও উদ্বুদ্ধ হবেন।’’ তিনি জানান, এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও কথা হয়েছে তাঁর। মোদী তাঁর মন কি বাত অনুষ্ঠানে এই প্রসঙ্গ তুলেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন