নবান্ন থেকে দিল্লির পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র
ফেডারেল ফ্রন্টের মাধ্যমে এক দিকে রাজনৈতিক ভাবে কেন্দ্রকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে তৃণমূল। অন্য দিকে রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে সংসদ ও সংসদের বাইরে দিল্লির বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে তারা। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এই সাঁড়াশি আক্রমণকে আরও চাঙ্গা করতে আজ রাজধানীতে পা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্র-বিরোধী জেহাদে এ বার সংখ্যালঘু বঞ্চনাকেও অস্ত্র করতে চাইছেন তিনি।
আগামিকাল মোদীকে লেখা মমতার একটি চিঠির বিষয়বস্তু নিয়ে রাজ্যসভার জিরো আওয়ারে আলোচনার নোটিস দিয়েছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে খবর ওই চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ‘‘রাজ্যের প্রায় ৪ লক্ষ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত ছাত্রছাত্রী ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিকের আগে ও পরের বৃত্তি এখনও হাতে পায়নি। রাজ্য বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কেন্দ্র বৃত্তি পাওয়া ছাত্রদের সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।’’ পাশাপাশি এ দিনও সংসদে দলিতদের উপর অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছেন মমতার সাংসদরা। প্রতিবাদে কক্ষত্যাগও করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার একুশের মঞ্চ থেকেই মমতা বার্তা দিয়েছিলেন আগামী দিনে জাতীয় রাজনীতির নিয়ন্ত্রক শক্তি হয়ে ওঠাই তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। দলের নেতারা জানাচ্ছেন, সেজন্যই সংসদের যুদ্ধকে কাজে লাগাতে চাইছেন নেত্রী। তাঁর নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর অন্তর্গত বিষয়গুলিকে নিয়ে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় ঝড় তুলতে চেষ্টা করছেন তৃণমূল সাংসদরা। চার দিনের এই দিল্লি সফরে নীতীশ কুমার, অরবিন্দ কেজরীবালের মতো মোদী-বিরোধী রাজনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। আবার রাজ্যের উন্নয়নের প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠকও করবেন। এ দিন দিল্লিতে মমতা বলেন, ‘‘চলতি মাসেই এক দিনের জন্যই মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি এসেছিলাম। এ বার রাজ্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করতে এসেছি। সংসদেও যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামিকাল মমতার সঙ্গে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। আগামী লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্র-বিরোধী আঞ্চলিক দলগুলিকে এককাট্টা করার কৌশল নিয়ে কথা বলতে পারেন দুই নেতা। বিরোধী দলের হাতে থাকা রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদ কী ভাবে এক সঙ্গে করা যায় তা নিয়েও দু’জনের মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা। সে দিনই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। নীতীশ ও কেজরীবালকে নৈশভোজেও আমন্ত্রণ করেছেন মমতা।
বিরোধী রাজনীতির পাশাপাশি চলতি সফরে রাজ্যের নানা সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সূত্রের খবর, জেটলির সঙ্গে মমতার বৈঠক হতে পারে বুধবার। আবার দলীয় সাংসদদের নিয়ে একটি বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে মমতার। আগামিকাল সংসদের দলীয় কার্যালয়ে ওই বৈঠক হওয়ার কথা। বৈঠকের জন্য সময় চাওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে।