চিনা পণ্য বয়কট নিয়ে বড় আন্দোলনে নামছে সঙ্ঘের সংগঠন। আর সেই সময়ই চিনা পণ্যকে ভারতের বাজারে আরও সুবিধা করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে সরব হল কংগ্রেস।
আগামিকাল হায়দরাবাদে জিএসটি পরিষদের বৈঠক। তার আগে দিল্লিতে আজ কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাব ও কর্নাটকের মন্ত্রীদের হাজির করাল এআইসিসি। ওই দুই রাজ্যের মন্ত্রীদের অভিযোগ, প্রস্তুতি ছাড়াই জিএসটি শুরু করেছে মোদী সরকার। সে কারণে পদে পদে হোঁচট খেতে হচ্ছে। তার মধ্যেই যে শিল্পে কৃষির পরেই সবথেকে বেশি রোজগার হয়, সেই বস্ত্র শিল্পে মার খাচ্ছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রের রাজস্ব সচিব গুজরাতের লোক হলেও সেখানেও এই শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের সমস্যা উপেক্ষা করা হচ্ছে। পঞ্জাব, কর্নাটকেও একই হাল। আর ছোট ব্যবসায়ীদের দুরবস্থার সুয়োগ নিয়ে বাজার দখল করছে চিনা পণ্য।
পঞ্জাবের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত সিংহ বাদল, কর্নাটকের অর্থমন্ত্রী কৃষ্ণ গৌড়ার অভিযোগ, বস্ত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বড় ব্যবসায়ীদের সুতো (ফেব্রিক) কিনতে হয় না। তাতে ১৮% করও দিতে হয় না। কিন্তু ছোট ব্যবসায়ীদের সুতো কিনে কাপড় বানিয়ে তার উপর ৫% কর দিতে হয়। এ দেশে ছোট ব্যবসায়ীদের মাধ্যমেই ৯০% ব্যবসা হয়। ফলে তাঁদের তৈরি বস্ত্রের দাম বেড়ে যায়। আর সেখানেই বাজার দখল করছে চিনের সস্তার পণ্য। রাহুল গাঁধী ৪ সেপ্টেম্বর সুরাতে গিয়ে এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরেও মোদীর হেলদোল নেই বলে অভিযোগ কংগ্রেসের।
আগামিকালের বৈঠকে এই বিষয়টি তুলতে চলেছেন কংগ্রেস শাসিত রাজ্যের মন্ত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, একে তো জিএসটি নেটওয়ার্ক মুখ থুবড়ে পড়েছে। কেন্দ্রের কাছথেকে রাজ্যগুলির যে অর্থ পাওয়ার কথা, সেটিও আসছে না। কেন্দ্রের ঘরে টাকা পড়ে আছে, তার থেকে তারা সুদও কামাচ্ছে। অথচ রাজ্যকে ধার করে সংসার চালাতে হচ্ছে! মনপ্রীত বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার জিএসটি থেকে ৯২ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের যে দাবি করছে, সেটি যে পুরোপুরি ভাঁওতা, তা স্পষ্ট।’’
অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, আসলে কংগ্রেস বিষয়টা নিয়ে রাজনীতি করছে। বস্ত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা আগাগোড়াই জিএসটি থেকে অব্যাহতি চাইছেন। রাহুল গাঁধীরা তাতে অক্সিজেন যোগাচ্ছেন। কিন্তু অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি প্রথমেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন, বস্ত্র শিল্পকে করমুক্ত করা হবে না। কারণ, সেটি করলে ‘ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট’-এর শৃঙ্খলাটাই ভেঙ্গে যাবে। বস্ত্র উৎপাদনকারীরা আগের ধাপের ‘ক্রেডিট’ পাবেন না। তার উপর বিদেশি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় দেশের শিল্প টিকতে পারবে না বলে দাবি জেটলির মন্ত্রকের।