ব্রিক্সে মোদী-শি। —ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের আলোচনার পরে বেজিংয়ের সঙ্গে নয়া সীমান্ত চুক্তি করতে চাইছে দিল্লি।
অটলবিহারী বাজপেয়ী ও মনমোহন সিংহের আমলে চিনের সঙ্গে দু’টি সীমান্ত চুক্তি হয়েছিল। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে সেই পথে হাঁটতে চান মোদীও। এই বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের কূটনীতিকেরা সক্রিয়।
ব্রিক্স সম্মেলনে যোগ দিতে চিনের শিয়ামেনে গিয়েছিলেন মোদী। ডোকলাম সঙ্কটের পরে সেখানেই প্রথম দেখা হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। ডোকলামের মতো পরিস্থিতি যাতে এড়ানো যায় সে জন্য সক্রিয় হওয়ার কথা বলেছে দু’পক্ষ। কূটনৈতিক প্রথা অনুযায়ী, এ বার চিনা প্রেসিডেন্টের ভারতে আসার কথা। কিন্তু চিনা বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, শি ও চিনের অন্য নেতারা এখন অক্টোবরে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস নিয়ে ব্যস্ত। ফলে এখনই তাড়াহুড়ো করে ভারতে আসার কথা ভাবছেন না শি। স্থির হয়েছে বিদেশসচিব ও অন্য কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালানো হবে।
মোদী সরকারের কর্তারা জানাচ্ছেন, বেজিংয়ের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থা ঘরপোড়া গরুর মতো। কারণ, চিন বার বার চুক্তিভঙ্গ করেছে। এক শীর্ষ কূটনীতিকের কথায়, ‘‘বাজপেয়ী চিনে গিয়ে সীমান্ত চুক্তি করেছিলেন। তাতে সিকিমের ভারত অন্তর্ভুক্তি মেনে নিয়েছিল বেজিং। বদলে ভারত ‘এক চিন’ নীতি মেনে নিয়েছিল। ওই নীতি অনুযায়ী তিব্বত ও তাইওয়ান চিনের অংশ।’’ কিন্তু ইউপিএ জমানায় তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের চিন সফরের সময়ে ফের সিকিমের ভারতভুক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলে বেজিং।
আরও পড়ুন:টুইটারে ‘ব্লক’ হলেন মোদীই
তাই চিন নিয়ে সতর্ক ভাবেই এগোতে চান মোদী। বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর ও চিনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিজয় গোখেল চিন নিয়ে নতুন নীতি তৈরি করেছেন। তার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রথমত, ভারত চায় নির্বাসিত তিব্বতি ধর্মগুরু ও নেতা দলাই লামাকে কোণঠাসা করার চেষ্টার বদলে তাঁর সঙ্গে আলোচনায় বসুক চিন। ভারতের তরফে চিনকে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে, তিব্বতে মাঝে মাঝেই চিনা শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয় বেজিংকে। দলাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করলে এই পরিস্থিতি এড়ানো যাবে। সাউথ ব্লক সূত্রের মতে, এ ভাবে তিব্বত নিয়ে পাল্টা চাপ বজায় রাখছে ভারত।
জয়শঙ্কর-গোখেলের নীতির অন্য দিকটি অরুণাচল প্রদেশের ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড নিয়ে। ইউপিএ জমানার বিদেশসচিব শ্যাম সারন সম্প্রতি জানিয়েছেন, সমঝোতার জন্য ওই ভূখণ্ড চিনের হাতে তুলে দিতে রাজি হয়েছিল অটলবিহারী সরকার। সাউথ ব্লক সূত্রে খবর, মোদী সরকার কোনও ভূখণ্ড ছাড়তে রাজি নয়। চিনের সঙ্গে আলোচনার সময়ে সে কথা মাথায় রাখতে বলা হয়েছে বিদেশ মন্ত্রককে।