সার্ক সম্মেলন বয়কট করে নয়াদিল্লি পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার পরেই আসরে নামল চিন। কাশ্মীর বিতর্ক মিটিয়ে ফেলতে বুধবার ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লিকে প্রস্তাব দিয়েছে বেজিং। তবে একই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, কাশ্মীর সম্পর্কে পাকিস্তানের অবস্থানকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে তারা।
চিনের সহকারী বিদেশমন্ত্রী লিউ ঝেনমিন কাশ্মীর নিয়ে ইসলামাবাদের এক প্রতিনিধি দলকে বলেছেন, বেজিং আশা করছে, ভারত ও পাকিস্তান আলোচনার পথে এগোবে এবং আঞ্চলিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এ কথা জানানো হয়েছে। এত দিন ধরে ভারতের আপত্তিকে গুরুত্ব না দিয়েই পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বাণিজ্য করিডর তৈরি করতে এগিয়েছে চিন। মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী তকমা দিতে রাষ্ট্রপুঞ্জে নয়াদিল্লির প্রস্তাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে তারা। উরির ঘটনার পরে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া নিয়ে গোটা বিশ্বে পাকিস্তান যখন কোণঠাসা, তখনও তাদের সঙ্গে ‘স্বাভাবিক বন্ধুত্ব’-এর কথা শুনিয়ে এসেছে বেজিং। আর সন্ত্রাসে পাকিস্তানের মদতের প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ, ভুটান ও আফগানিস্তান ভারতের পাশে দাঁড়ানোর পরেও বেজিংয়ের বক্তব্য, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। কূটনীতিকেরা মনে করছেন, সিন্ধু ও ব্রহ্মপুত্রের জল নিয়ে বেজিংয়ের অবস্থান ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বের। কেননা, সিন্ধুর উৎপত্তি চিনে। আর ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যেই চিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছে ভারত। ফলে সিন্ধু চুক্তি নিয়ে ইসলামাবাদকে কোণঠাসা করতে চাইলেও চিন পাকিস্তানকে সমর্থন করে কিনা, তা-ও দেখতে হচ্ছে ভারতকে।
উরির ঘটনার পরে পাকিস্তানের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে নরেন্দ্র মোদীর মন্তব্য, রক্ত ও জল একসঙ্গে বইতে পারেনা। চুক্তি নিয়ে ইসলামাবাদকে চাপে ফেলতে দিল্লিতে বৈঠকে বসে রণনীতি ঠিক করেছেন মোদী। এর পরেই সিন্ধু বিতর্ক নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে অভিযোগ এনেছে ইসলামাবাদ। চন্দ্রভাগা নদীতে ভারত যাতে বাঁধ না দিতে পারে, তা দেখার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভারতও সিন্ধু চুক্তি নিয়ে বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছে।