ওবর-এর সঙ্গে মোদীর প্রকল্প জুড়তে চায় চিন

  কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, তা-ই এশিয়ার বিভিন্ন দেশ, আফ্রিকা এবং ইউরোপের মধ্যে সংযোগ সাধনের এই প্রকল্পে নয়াদিল্লিকে অন্তর্ভুক্ত করানোর প্রয়াস চালানো হচ্ছে চিনের তরফে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভারতের সহায়তা না পেলে মহাযোগাযোগ প্রকল্প ওবর-এর রূপায়ণে বেশ কিছু সমস্যা থেকে যাচ্ছে বলে মনে করছে বেজিং। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, তা-ই এশিয়ার বিভিন্ন দেশ, আফ্রিকা এবং ইউরোপের মধ্যে সংযোগ সাধনের এই প্রকল্পে নয়াদিল্লিকে অন্তর্ভুক্ত করানোর প্রয়াস চালানো হচ্ছে চিনের তরফে। সূত্রের খবর, সম্প্রতি নয়াদিল্লি এসে চিনের বাণিজ্যমন্ত্রী ঝং শান বৈঠক করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর সঙ্গে। সেই বৈঠকে চিনের মন্ত্রী প্রভুকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের সঙ্গে ওবরকে সংযুক্ত করতে আগ্রহী চিন।

Advertisement

ভারতের পক্ষ থেকে কোনও কথা দেওয়া হয়নি বেজিংকে। শুধু বলা হয়েছে, আঞ্চলিক যোগাযোগের প্রশ্নে আলোচনা চালাতে ভারতও পিছপা নয়। কিন্তু ওবর-এর অন্যতম অংশ, চিন-পাকিস্তান বাণিজ্য করিডর নিয়ে ভারতের প্রবল উদ্বেগ রয়েছে। নয়াদিল্লি চায়, সেই উদ্বেগের নিরসন করুক বেজিং।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আগামী জুনে মোদী–শি চিনফিং-এর বৈঠকের মূল আলোচ্যসূচি যে হতে চলেছে ওবর, তা ক্রমশই স্পষ্ট হচ্ছে। কীভাবে ওবর এর সঙ্গে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র যোগসূত্র তৈরি করা হবে, তা নিয়ে পরিকল্পনা তৈরি করছে বলে জানিয়েছে বেজিং। সূত্রের খবর, চিনা বাণিজ্যমন্ত্রী প্রভুকে বলেছেন, গোটা বিষয়টি শীর্ষপর্যায়ে ভারতের সামনে তুলে ধরা হবে।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণভাবে চিনের প্রেসিডেন্ট ‘বোয়াও ফোরাম অব এশিয়া’ সম্মেলনে ওবর প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘চিনের কোনও ভূরাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই। কারও উপর জোর করে বাণিজ্যিক শর্ত চাপিয়ে দিতে চাই না। কোনও পৃথক ব্লক গঠন করাও বেজিং-এর উদ্দেশ্য নয়।’’ নাম না করে কার্যত ভারতের তোলা প্রশ্নগুলিরই যেন উত্তর দিতে চেয়েছেন শি। তাঁর কথায়, ‘‘এই উদ্যোগ নতুন। ফলে তাতে সামিল হওয়ার প্রশ্নে বিভিন্ন মত থাকাই স্বাভাবিক। তবে আমরা যত এর সুফল ভাগ করে নিতে পারব, মতপার্থক্য তত কমবে।’’

কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ওবর সম্পর্কে নীতির সূক্ষ্ম বদল ঘটিয়েছে সাউথ ব্লকও। তা হল, এই প্রকল্পের প্রকাশ্য সমালোচনা করা হবে না। শুধুমাত্র চিন-পাক বাণিজ্য করিডর নিয়েই ভারতের আপত্তি জানানো হবে। ওবর প্রকল্পে নিজেরা যোগ না দিলেও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে অনেক দৌত্য করেও আটকাতে পারেনি সাউথ ব্লক। ফলে ভারত আঞ্চলিক রাজনীতিতে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে — এমন আশঙ্কাও রয়েছে সরকারের অন্দরে। তাই আপাতত চিনা-নীতিকে কিছুটা নরম করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নিজেদের অংশীদারি বাড়াতে উৎসুক মোদী সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন