ভারতীয় বায়ুসেনায় যুক্ত হল চারটি চিনুক হেলিকপ্টার। ছবি: ভারতীয় বায়ুসেনার টুইটার হ্যান্ডল থেকে নেওয়া
আরও শক্তিশালী হল ভারতীয় সেনাবাহিনী। বায়ুসেনায় যুক্ত হল চিনুক সিএইচ-৪৭ হেলিকপ্টার। সোমবার চণ্ডীগড়ের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে চারটি চিনুক হেলিকপ্টার অন্তর্ভুক্তির কথা ঘোষণা করলেন বায়ুসেনা প্রধান বি এস ধানোয়া। বিশাল আকারের এই কপ্টারগুলি সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবে। উড়তে পারবে রাতেও। সেনা জওয়ানদের স্থানান্তরের পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রে গোলাবারুদ নিয়ে যাওয়া, পরিকাঠামো জাতীয় জিনিসপত্র বহনের মতো কাজ করতে পারা এই হেলিকপ্টারগুলি হয়ে উঠবে সেনাবাহিনীর ‘গেম চেঞ্জার’— মত বায়ুসেনা প্রধানের।
চিনুক সিএইচ-৪৭ কপ্টারগুলি তৈরি করেছে মার্কিন সংস্থা বোয়িং। এই সংস্থার সঙ্গে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার বিনিময়ে ১৫টি চপার কেনার চুক্তি করে। তার মধ্যে চারটি বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত হল। দু’টি ইঞ্জিন বিশিষ্ট এই চপারগুলি ওড়ানোর জন্য চার জন করে পাইলট এবং ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার আমেরিকার দেলাওয়ারে গিয়ে প্রশিক্ষণও নিয়ে এসেছেন। বাকি ১১টি কপ্টার ২০২০ সালের মধ্যেই বায়ুসেনার হাতে চলে আসবে বলে সেনা সূত্রে খবর।
এ দিন চারটি কপ্টার অন্তর্ভুক্তির পর বায়ুসেনা প্রধান বলেন, ‘‘শুধু দিনেই নয়, রাতেও সমান ভাবে উড়তে পারে চিনুক হেলিকপ্টার। রাফালের মতো চিনুকও গেম চেঞ্জার হয়ে উঠবে।’’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘দেশের নিরাপত্তা নিয়ে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। ভৌগলিক অবস্থানের নিরিখে বৈচিত্রপূর্ণ এই দেশ। তাই অনেক জায়গাতেই সরাসরি আকাশপথে যোগাযোগ করতে হয়। এই ভৌগলিক চরিত্রের কথা মাথায় রেখেই ভারতের জন্য বিশেষ কিছু প্রযুক্তি ও পদ্ধতিগত পরিবর্তনও করা হয়েছে চিনুকে। এটা জাতীয় সম্পদ।’’ পাশাপাশি বায়ুসেনার তরফে টুইট করে বলা হয়েছে, এই কপ্টারগুলি ত্রাণ ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিরাট সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: ভারতের বিরুদ্ধে এফ-১৬ নয়, ব্যবহার হয়েছিল চিনা প্রযুক্তির জেএফ-১৭, দাবি পাকিস্তানের
আরও পডু়ন: ক্ষমতায় এলেই দরিদ্রতম ২০ শতাংশকে বছরে ৭২,০০০ টাকা, প্রতিশ্রুতি রাহুলের
কেনবৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে এই হেলিকপ্টার?সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, এর বিশাল আকার এবং সেই অনুযায়ী বহন ক্ষমতা যাকে বলা হয়‘হেভি ডিউটি মাল্টি মিশন ট্রান্সপোর্ট হেলিকপ্টার’। এক লপ্তে অন্তত ৪৫ জন সেনা জওয়ান এবং ১১ টন বা ১১০ কুইন্টাল ওজন পেটের মধ্যে উড়ে যেতে পারে এই হেলিকপ্টারগুলি। এছাড়া নীচে ঝুলিয়ে আরও ১০০ কুইন্টাল ভারী জিনিস বহন করে উড়তে পারে সিএইচ- ৪৭।
চিনুক হেলিকপ্টারগুলিতেএমন প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যাতে যে কোনও দুর্গম পরিবেশে স্বচ্ছন্দে পৌঁছে যেতে বা নামতে পারে। খুব সহজেই অভিমুখ বদল করতেও সমান দক্ষ। ফলে অত্যন্ত দুর্গম এলাকায় সামরিক সামগ্রী, সেনা জওয়ানদের খাবার ও অন্যান্য সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এর জুড়ি নেই। সারা বিশ্বে মূলত দুর্গম এলাকায় যাতায়াতের জন্যই এই কপ্টারগুলি ব্যবহার করা হয়।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আরও পড়ুন: প্রচারে নেমেই ‘মা’ মমতাকে ‘কৈকেয়ী’ বলে কটাক্ষ ভারতীর
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এর ককপিট সম্পূর্ণ সতন্ত্র এবং ডিজিটাল। ফলে পাইলটদের ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে এই কপ্টারগুলি চালাতে। ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণও সম্পূর্ণ হয়েছে পাইলটদের।
গত বছর কেরলে ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধারকাজে নামে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার। চিনুক হেলিকপ্টারগুলি সেই কাজ আরও ভাল ভাবে করতে পারবে বলে সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে ‘রক্ষাকর্তা’ হয়ে উঠবে চিনুক। এছাড়া বড় আকারের আগুন, দাবানল নেভানোর কাজেও সিদ্ধহস্ত এই কপ্টারগুলি— এমনটাই জানানো হয়েছে সেনার তরফে।