(বাঁ দিকে) নীতীশ কুমার এবং চিরাগ পাসোয়ান (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বিহারের নীতীশ কুমারের সরকার বিরুদ্ধে এ বার সুর চড়ালেন চিরাগ পাসওয়ান। প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র চিরাগ এনডিএর সহযোগী। তাঁর দলের সমর্থন রয়েছে বিহার সরকারে। তবে চিরাগের মতে, এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে সমর্থন করার জন্য তিনি দুঃখিত! কেন তাঁর এমন মনে হচ্ছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ। তাঁর কথায়, ‘‘বিহার জুড়ে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ প্রশাসন!’’
চলতি বছরের শেষে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন। নীতীশকে গদি থেকে সরাতে নিজেদের মতো ঘুঁটি সাজাচ্ছে বিরোধীরা। তবে গত কয়েক দিনে একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে রয়েছে বিহার। ব্যবসায়ী খুন থেকে শুরু করে গণধর্ষণ, নানা ঘটনার জেরে সমালোচনায় নীতীশের সরকার। বিরোধীরা তো বটেই তাঁর জোটসঙ্গী চিরাগের দলও বার বার বিহার সরকারকে নিশানা করছে।
চিরাগের কথায়, ‘‘অপরাধীদের সামনে প্রশাসন মাথা নত করেছে। বিহারে খুন, ডাকাতি, অপহরণ এবং ধর্ষণের মতো ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বিহারের মানুষ এখন আর রাজ্যে নিরাপদবোধ করছেন না। সব কিছু দেখে শুনে মনে হচ্ছে প্রশাসন অপরাধীদের থামাতে ব্যর্থ!’’ চিরাগের আরও অভিযোগ, সরকার পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। তাঁর উপদেশ, ‘‘সরকারের সময়মতো জেগে ওঠা প্রয়োজন।’’
চিরাগ মনে করছেন, কেন্দ্রীয় রাজনীতি নয় তাঁর প্রয়োজন রাজ্যস্তরে রাজনীতিতে। অনেকের মতে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়ে চিরাগ বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে ঝাঁপাবেন। দিন কয়েক আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, বিহারের আসন্ন বিধানসভা ভোটে সব আসনে লড়বে তাঁর দল এলজেপি (রামবিলাস)। যদিও বিজেপি দাবি করছে, চিরাগ এনডিএ-তেই থাকছেন!
লালুপ্রসাদ যাদব-নীতীশ কুমারের সমসাময়িক হলেও বরাবরই জাতীয় রাজনীতিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন চিরাগের পিতা রামবিলাস। বাকি দু’জন যখন রাজ্য-রাজনীতিতে ক্ষমতা দখলের জন্য সক্রিয়, তখন রামবিলাস বার বার জোট বদলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বেই মনোনিবেশ করেছেন। কিন্তু ২০২০ সালে রামবিলাসের প্রয়াণের পরে বিহারের বিধানসভা ভোটে চিরাগের নেতৃত্বে অখণ্ড এলজেপি আলাদা ভাবে ভোটে লড়েছিল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দেননি তিনি। নিশানা করেছিলেন নীতীশের জেডিইউকে। মোট ১৩৪ আসনে লড়ে মাত্র একটিতে জিতলেও সাড়ে পাঁচ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছিল তাঁর দল। এ বার বিহারের নির্বাচনে কোন সমীকরণে হাঁটেন চিরাগ, সে দিকে নজর রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।