Narendra Modi in Manipur

‘সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে শান্তির পথে আসুন’, মণিপুরে গিয়ে হিংসায় জড়ানো সব পক্ষকে অনুরোধ মোদীর

মণিপুরের চুরাচান্দপুরের সভা থেকে মোদী বলেন, “আমি সব সংগঠনের কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে শান্তির পথে আসুন। মণিপুরের উন্নতির জন্য ভারত সরকার কাজ করে চলেছে।”

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৫২
Share:

মণিপুরের চুরাচান্দপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার। ছবি: পিটিআই।

গত ২৮ মাস ধরে গোষ্ঠীহিংসায় দীর্ণ মণিপুরে গিয়ে শান্তির বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানকার সব ক’টি সংগঠনকে শান্তির পথে আসার অনুরোধ জানালেন। এ-ও জানান যে, সরকার মণিপুরের পাশে রয়েছে।

Advertisement

গত ২৮ মাসে মণিপুরে যাননি প্রধানমন্ত্রী। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিরোধী দলগুলি। শনিবার দুপুরে মিজ়োরাম থেকে বিমানে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে পৌঁছোন তিনি। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে কুকি-জ়ো অধ্যুষিত চুরাচান্দপুর জেলায় যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সড়কপথে সেখানে পৌঁছোন তিনি।

চুরাচান্দপুর শহরে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। ৭০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। জানান, মণিপুরে সড়ক এবং রেল যোগাযোগ আরও উন্নত করতে পদক্ষেপ করছে সরকার। ওই সভা থেকেই শান্তির ডাক দেন মোদী। তিনি বলেন, “আমি সব সংগঠনের কাছে অনুরোধ করছি, আপনারা সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে শান্তির পথে আসুন। মণিপুরের উন্নতির জন্য ভারত সরকার কাজ করে চলেছে।”

Advertisement

চুরাচান্দপুরে পৌঁছেই গোষ্ঠীহিংসায় ঘরছাড়াদের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩ মে এই জেলা থেকেই অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল মণিপুরে। তফসিলি জনজাতির তকমা দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছিল মেইতেইরা। তার প্রতিবাদে পথে নামে একটি আদিবাসী গোষ্ঠী। সেখান থেকেই হিংসা ছড়ায় কুকি-জ়ো অধ্যুষিত চুরাচান্দপুরে। সেই জেলায় গিয়ে ঘরছাড়াদের সঙ্গে মোদীর দেখা করাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। চুরাচান্দপুর থেকে মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকায় যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানেও ঘরছাড়াদের সঙ্গে কথা বলেন এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি।

ইম্ফলের সভা থেকেও হিংসা ভুলে শান্তিরক্ষার আহ্বান জানান তিনি। প্রধানত কুকি-জো অধ্যুষিত মণিপুরের পাহাড়ি এলাকা এবং মেইতেই অধ্যুষিত উপত্যকার মধ্যে সেতুবন্ধনের ডাক দেন তিনি। ইম্ফলে মোট ১২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মণিপুরের মানুষদের ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন। সে রাজ্যে হিংসার ঘটনাকে ‘অনভিপ্রেত’ বলে দাবি করেন মোদী। তিনি বলেন, “ভারত সরকার চায় আলোচনা, শ্রদ্ধা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে শান্তিপ্রতিষ্ঠা হোক।’’ শুধু তা-ই নয়, ইম্ফলের সভায় মোদীর মুখে শোনা যায় পড়শি দেশ নেপালের কথাও। সভা থেকে তিনি নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্যনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কীকে অভিনন্দন জানান। তাঁর কথায়, ‘‘হিমালয়ের কোলে অবস্থিত নেপাল আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। দু’দেশের ইতিহাস ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। নেপাল ও ভারতের পারস্পরিক বিশ্বাসের সম্পর্কও রয়েছে। এ ভাবেই আমরা একসঙ্গে অগ্রগতির পথে এগোচ্ছি।’’ পাশাপাশি, নেপালের তরুণ তুর্কি তথা ‘জেন-জ়ি’র প্রশংসাও শোনা গিয়েছে মোদীর মুখে। তাঁর কথায়, ‘‘নেপালের সাম্প্রতিক ঘটনাবলিতে একটি বিষয় সকলের অলক্ষ্যেই রয়ে গিয়েছে। তা হল, চলমান বিক্ষোভের মধ্যেও নেপালে তরুণদের এলাকা পরিষ্কার করতে এবং রাস্তাঘাট রঙে-ছবিতে ভরিয়ে দিতে দেখা গিয়েছে। আমি সমাজমাধ্যমেও এটি দেখেছি। এ ধরনের ইতিবাচক কাজ শুধু অনুপ্রেরণামূলকই নয়, বরং নেপালের পুনরুত্থানের লক্ষণ।’’ আসন্ন ‘উজ্জ্বল ভবিষ্যতের’ জন্য প্রতিবেশী দেশকে আগাম শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন মোদী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement