শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে প্রচার শিলচরে

স্মার্ট সিটির স্বপ্ন আগেই গুঁড়িয়ে গিয়েছে। এ বার অম্রুত (অটল মিশন ফর রিজ্যুভিনেশন অ্যান্ড আরবান ট্রান্সফরমেশন)-এ যেন শিলচরের স্থান পাকা হয়, সে জন্য কোমর বেঁধেছে নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলচর শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:০২
Share:

স্মার্ট সিটির স্বপ্ন আগেই গুঁড়িয়ে গিয়েছে। এ বার অম্রুত (অটল মিশন ফর রিজ্যুভিনেশন অ্যান্ড আরবান ট্রান্সফরমেশন)-এ যেন শিলচরের স্থান পাকা হয়, সে জন্য কোমর বেঁধেছে নাগরিক স্বার্থরক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানিয়ে আজ একটি অডিও সিডির উন্মোচন করা হয়। সেই সিডি বাজিয়ে তাঁরা শিলচরে মিছিল করেন।

Advertisement

গত সপ্তাহে বড়সড় সভা ডেকে অম্রুতের কথা সবাইকে জানান কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন। অম্রুত-ভাবনায় দেশের ৫০০টি শহরের মধ্যে শিলচরও রয়েছে। কিন্তু এটি আর দশটি প্রকল্পের মতো নয়। এখন ওই বাছাই শহরগুলিকে রীতিমত পরীক্ষায় বসতে হবে, ভাল নম্বর পেতে হবে। জেলাশাসক সে জন্য সরকারি বিভাগগুলিকে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে বলেন। শহরের রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সংস্থাগুলিকেও এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিয়মিত বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানীয় জল, ফুটপাত লড়াই জেতার বড় হাতিয়ার।’’ সংগ্রাম পরিষদের বক্তব্য, তারা এই বিষয়গুলি নিয়ে ২০০৯ সালে সংগঠনের জন্মলগ্ন থেকে কাজ করে চলেছে।

পরিষদের কার্যবাহী সভাপতি শশাঙ্কশেখর পাল বলেন— ‘‘পুরসভা, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও বিদ্যুৎ বিভাগে কম দৌড়ঝাঁপ করিনি। কিন্তু ভাল ফল মেলেনি।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘এমনকী শহরের মানুষও প্রত্যাশামতো এগিয়ে আসেননি। পথসভা করেও দেখা গিয়েছে, মানুষের যেন শোনার ফুরসত নেই।’’ তাই অডিও সিডির পরিকল্পনা তাঁদের। প্রাথমিক পর্যায়ে নিজেরাই মিছিল করে গিয়ে মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে সিডি বাজাবেন। পরে শহরে তা মাইকিংয়ের মতো চলতে থাকবে।

Advertisement

কী আছে এই সিডি-তে।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হরিদাস দত্ত বলেন, ‘‘সরকারি বিভাগগুলির উপর নিজেদের দায়িত্ব পালনের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে হবে। সঙ্গে প্রয়োজন নাগরিক সচেতনতা।’’ এই কাজটাই তাঁরা নতুন করে হাতে নিয়েছেন। হরিদাসবাবুর কথায়, ‘‘আগে অসমের পরিচ্ছন্ন শহর বলতে তেজপুর ও শিলচরকে বোঝানো হতো। তেজপুর সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারলেও শিলচর অপরিচ্ছন্নতার চোরাবালিতে
হারিয়ে গিয়েছে। সাধারণ জনতা নালা-নর্দমায় তো বটেই, রাস্তাতেও আবর্জনা ফেলে রাখে।’’

পার্শ্ববর্তী আগরতলা ও আইজলকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরে হরিদাস দত্ত বলেন, ‘‘ওই সব শহরের আবালবৃদ্ধবণিতা নিজের শহরকে যতটা ভালবাসতে পারে, আমরা তা পারি না। তাই রাস্তার ধারে আবর্জনার প্যাকেট ছুঁড়ে ফেলি। হাঁটতে হাঁটতে বাদামের খোসা, চিপসের প্যাকেট যেখানে-সেখানে ফেলে দিই।’’

নর্দমা সাফাই ও নিয়মিত আবর্জনা ফেলে শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা পুরসভার দায়িত্ব হলেও তারা তা পারছে না বলে অভিযোগ করেন সংগ্রাম পরিষদের শীর্ষকর্তারা। তাঁরা বলেন, ‘‘শহরে পর্যাপ্ত ডাস্টবিনও নেই। বিশুদ্ধ পানীয় জল অমিল। নেই ফুটপাত। অথচ শহরবাসী সে সবের জন্য কর দেন।’’

তাঁরা আশাবাদী, এক দিকে বিভাগগুলির উপর চাপ সৃষ্টি এবং অন্য দিকে নাগরিকরা নিজেদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করলে শহরের শ্রীবৃদ্ধি মোটেও কঠিন কাজ নয়।

জেলাশাসক বিশ্বনাথন বলেন, ‘‘অম্রুত-এর জন্য পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাওয়াটাই বড় কথা।’’ তা এখন কাজে লাগানোর অঙ্গীকার করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। পুরপ্রধান নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর জানান, তাঁরাও শহরের জঞ্জাল নিষ্কাশনের জন্য বিশেষ উদ্যোগী হয়েছেন। শহরটিকে ৯টি জোনে ভাগ করে ৪টি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তাঁরা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে তাদের সাফাইকর্মীরা ঠেলাগাড়িতে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন। পরে সে সব ট্রাঞ্চিং গ্রাউন্ডে ফেলা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন